সিরাজগঞ্জে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অতিরিক্ত এসপিসহ আহত ৩০

সিরাজগঞ্জে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের একটি মুহূর্ত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২ টার দিকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ানুল ইসলামসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের ইসলামিয়া সরকারি কলেজ ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের ঝাঐল উড়ালসেতু এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এর আগে শহরের ইসলামিয়া সরকারি কলেজ মাঠ ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম ঝাঐল এলাকায় ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ জড়ো হতে থাকেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এ কমপ্লিট শাটডাউনকে লক্ষ্য করে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষ এড়াতে নিবৃত্ত রাখার প্রচেষ্টা চালায় পুলিশ।

কোটাবিরোধীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে দেড়টার দিকে কোটাবিরোধীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় কোটাবিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। এদিকে ইসলামিয়া সরকারি কলেজ এলাকায় শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ানুল ইসলাম গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে দ্রুত সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ঝাঐল উড়ালসড়কে ও ইসলামিয়া সরকারি কলেজ এলাকায় পুলিশের ছোরা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেটে অন্তত ২২ জন শিক্ষার্থী আহত রয়েছেন। এর মধ্যে শিহাব (১৯) ও মুন্না (১৭) শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ ছাড়া পৌর শহরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ভর্তি রয়েছেন।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিত্সক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গুরুতর আহত অবস্থায় বেলা পৌনে তিনটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিরাজগঞ্জ সার্কেল) রেজওয়ানুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি পেটের বাঁ পাশে ইটের আঘাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এটি কতটুকু গুরুতর, সে বিষয়ে জানতে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়েছে। এখনো পরীক্ষার ফলাফল আমাদের হাতে আসেনি। বর্তমানে তাঁকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া বলেন, ‘মহাসড়কের কড্ডার মোড় এলাকায় দায়িত্ব পালন করছি। কাজেই শহরের ভেতরে সংঘর্ষের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ানুল ইসলাম আহত হওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন করতে এসে মহাসড়কে উঠে পড়লে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছি। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র, ইটপাটকেল নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করছে। আর এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই কিছু কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।’