বাঘায় আওয়ামী লীগ নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় খায়রুজ্জামানকে নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের প্রতিবাদে জেলা কৃষক লীগের বিক্ষোভ মিছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের সাহেববাজার এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে হত্যার জেরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানসহ নেতাদের নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা কৃষক লীগ। কর্মসূচি থেকে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহরিয়ার আলমের শাস্তি দাবি করা হয়। এ ছাড়া নিহত নেতার জানাজার নামাজে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকারকে হেনস্তারও প্রতিবাদ জানানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে নগরের সোনাদিঘী মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনটি। পরে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এসে নেতা–কর্মীরা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে কৃষক লীগের সভাপতি তাজবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ আলী খান, সহসভাপতি এন্তাজ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হক, বাগমারা উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে নেতারা বলেন, গত ২৭ জুন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের জানাজায় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম রাজশাহীর সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান ও বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লায়েব উদ্দীনকে নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। সেদিন জানাজার নামাজে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকারকে লাঞ্ছিতের পর জানাজা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শাহরিয়ার আলম তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। শাহরিয়ার আলমকে তাঁর বক্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করতে হবে।

২৭ জুন আশরাফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ‘মদদদাতা’ হিসেবে এ এইচ এম খায়রুজ্জামানসহ অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করার ঘোষণা দেন শাহরিয়ার আলম। যদিও খায়রুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা শাহরিয়ার আলমকেই ঘটনার জন্য দায়ী করেন। এ নিয়ে রাজশাহীতে খায়রুজ্জামানের অনুসারীরা আন্দোলন করছেন। তবে ১ জুলাই মহানগর আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলন করে শাহরিয়ার আলমকে নিয়ে কর্মসূচি নেওয়া থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয়।

জেলা কৃষক লীগের সভাপতি তাজবুল ইসলাম কর্মসূচির বিষয়ে বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ তাদের নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তারা জেলার রাজনীতি করে। কর্মসূচি দেওয়ার আগে তিনি জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের কর্মসূচি করতে কোনো বাধা নেই।

দলিল লেখক সমিতির কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে ২২ জুন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা চত্বরের ভেতর থেকে আশরাফুল ইসলামকে উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জুন বিকেলে তিনি মারা যান।

সংঘর্ষের পরদিন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। পরে ২৭ জুন রাজশাহী আদালতে আরেকটি মামলা করে অন্য পক্ষ। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।