প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: সারাদেশের মতো পাবনার ঈশ্বরদীতে চলমান পরিস্থিতিতে জননিরাপত্তা নিশ্চিতে চলছে কারফিউ। গত কয়েক দিনের সহিংসতা আর অস্থিতিশীলতায় জনমনে আতঙ্ক কেটে অনেকটা স্বস্তি ফিরছে। তবে ভোগান্তিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ। দেশের অন্যান্য এলাকার মতো কারফিউর কারণে ঈশ্বরদী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কে কোনো গণপরিবহন না থাকায় মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হচ্ছেন, তারা হেঁটে বা রিকশা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, সিএনজিতে ভেঙ্গে ভেঙ্গে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাচ্ছেন।
অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে। স্থগিতকৃত বোর্ড পরীক্ষাগুলো নিয়ে চিন্তিত পরীক্ষার্থীরা।
পাকশী ইপিজেড এলাকায় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মোতালেব হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথম দুই দিনের কারফিউ এর মতো আর আতঙ্ক কাজ করছে না। তবে রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় কিছুটা ভয় লাগছে।
ঈশ্বরদী শহরের কলেজরোড এলাকার বাসিন্দা ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান তারেক বলেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ কারফিউ ঘোষণার পর আতঙ্কিত ছিলেন। সন্ধ্যার আগে তাঁর ছাত্রাবাসের সব শিক্ষার্থী চলে যাওয়ায় তিনি সেখানে একাই ছিলেন। পরদিন দুপুরে বিভিন্ন বাহনে চড়ে বাড়িতে আসেন।
এদিকে মার্কেট ও বিপণী বিতানের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে রেখেছেন। তবে বাজারে কারফিউ শিথিল হলে সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছে। বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখান থেকে বিভিন্ন স্থানে মাছ ও সবজি পাঠানো যাচ্ছে না। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কারফিউ শিথিল হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাবিক্রি হচ্ছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তারপরও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাসের নেতৃত্বে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা তৎপর আছেন।
প্রিমিয়ার ব্যাংক ঈশ্বরদী শাখার ব্যবস্থাপক আলী আহম্মেদ জানান, এখন সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হচ্ছে, মানুষের হাতে নগদ টাকা নেই। ব্যাংকিং আর মোবাইল ব্যাংকে অভ্যস্ত হওয়াই মানুষের কাছে টাকা নেই। এভাবে আর কয়েকদিন চলতে থাকলে সবচেয়ে বড় সংকট হবে নগদ টাকার।
ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সদস্য রবিউল আওয়াল সজীব জানান, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা আশার আলো দেখছেন ঘুরে দাঁড়ানোর।
ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ এভাবে ধ্বংস করা যায়, ভাবতেই পারি না। ছাত্র আন্দোলনের প্রতি আমাদের সরকারের আন্তরিকতা ছিল। কিন্তু তাঁদের আন্দোলনকে ঢাল বানিয়ে বিএনপি-জামায়াত সারা দেশের সন্ত্রাসীদের ঢাকায় এনে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার পাশে আছি, জীবন দিয়ে হলেও আপনার পাশে থাকব।
তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, দেশের মানুষ আপনার নেতৃত্বে আবার ঘুরে দাঁড়াবে।