কোটা সংস্কার আন্দোলন: ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাবি শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ

সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলেও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেললাইনে  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে রেললাইন অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজারসংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করেন তাঁরা। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলেও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।

এর আগে বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল ঘুরে ক্যাম্পাসসংলগ্ন স্টেশনবাজার এলাকায় যাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেন। সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত আছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রেললাইন অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেললাইনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

এদিকে, বেলা সোয়া তিনটার দিকে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। তাঁদের কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
 
বৃষ্টির মধ্যেই রেললাইন অবরোধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই হবে এক সাথে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে কোটা আন্দোলনকে বেগবান করতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আজকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ জঘন্য ও বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা রেললাইন অবরোধ করেছি।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা একটা যৌক্তিক বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছি। সরকার নিজেই এটার সমাধান করতে পারে, কিন্তু সেখানে পেটোয়া বাহিনী পুলিশ কীভাবে ছাত্রসমাজের ওপর লাঠিচার্জ করে। এর প্রতিবাদে আমরা রেললাইন অবরোধ করছি। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি এভাবেই লাগাতার চলবে।’