সিলেটে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় গন্তব্যে যাচ্ছেন নগরবাসী। সোমবার সকালে নগরের কিনব্রিজে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি সিলেট: সিলেটে আজ সোমবার সকালে তিন ঘণ্টায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে জেলায় ফের বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সিলেটে আজ সকালের বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হওয়া লোকজন। দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি এবং সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নগরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা বন্যার শঙ্কায় আছেন।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর গতকাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আগামী বুধবার পর্যন্ত সিলেটে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আজ সকাল থেকে বৃষ্টিপাত হলেও নগরের কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়নি। কিন্তু সুরমা নদীর পানি বাড়ায় শঙ্কায় আছেন নগরবাসী। নগরীর রামের দিঘীরপাড় এলাকার বাসিন্দা আরিফ আহমদ বলেন, গত মাসের ২০ তারিখে ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় ঘর ছেড়ে স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। আবার এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় কি না, এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সিটি এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত আছে। জলাবদ্ধ অবস্থার সৃষ্টি হলে লোকজন সেখানে উঠতে পারবেন। তবে আজ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট সূত্রে জানা গেছে, এক মাস ধরে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সুরমা নদীর পানি পাঁচ দিন পর বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। আজ সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া এক মাস ধরে কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে আছে। এ ছাড়া সিলেটের লুভা, সারি, ডাউকি নদী এবং ধলাই নদের পানি বাড়ছে।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে গতকাল পর্যন্ত ১০ হাজার ৯০৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় ৬৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে। এর মধ্যে ২১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন লোকজন। তবে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন নেই।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসন সতর্ক আছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণসহায়তা অব্যাহত আছে।