শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে কবে?

স্কুল ছুটির পর তপ্ত রোদের মধ্যে দল বেঁধে বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা | ফাইল ছবি

এস এম আববাস: চলমান এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া মাধ্যমিকের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শেষ করতেও চাপ রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলা গেলে কোনোটিই সম্ভব হবে না। তাই আগামী দুই দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে। অন্যদিকে মেট্রোপলিটন সিটি এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে আরও দুই দিন সময় লাগবে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে এখনও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আগামী দুই দিনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও আলোচনা হয়নি।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার বিশেষ মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আগামী আরও দুই দিন অফিস নতুন সময়সূচি অনুযায়ী চলবে। এ সময় বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে না। তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এক বার্তায় বলেছেন, ‘উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানানো হবে। ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।’

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সমস্যা হবে না। তাছাড়া সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় চলতে সমস্যা হচ্ছে না। শিগগিরই হয়তো সিটি করপোরেশন এলাকায়ও শুরু করা যাবে।  

প্রসঙ্গত, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস অবস্থা তৈরি হলে ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নিরাপত্তার জন্য শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়।

একই দিন দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা কার্যযক্রম বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়।

গত ২১ জুলাই ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

এর আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় গত ১৬ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১৮ জুলাইয়ের চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। কোটা পদ্ধতি নিয়ে চলমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় গত ১৮ জুলাই আবার ২৮ জুলাইয়ের পরীক্ষাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয় সব পরীক্ষা।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানান, স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১১ আগস্টের পর অনুষ্ঠিত হবে।