জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পরে বিক্ষোভ করেন ছাত্রীরা। এ সময় হল না ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী বিকেল চারটার মধ্যে আবাসিক হল ছাড়তে বলা হয়।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
তবে এ সিদ্ধান্ত আসার পরে, বিশ্ববিদ্যালয়টির একমাত্র ছাত্রীদের আবাসিক হল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে সব দাপ্তরিক কার্যক্রম যথারীতি চলমান থাকবে। এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত সব ছাত্রীকে নিরাপদ আবাসস্থলে যাওয়ার জন্য বিকেল সাড়ে চারটার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেলা দেড়টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় ছাত্রীরা হলে বিক্ষোভ করছিলেন। বিক্ষোভের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ‘প্রসাশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘হল আমাদের ঠিকানা, আমরা হল ছাড়ব না’সহ নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক ছাত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি বিবেচনায় কিছু সময় নিয়েছেন প্রভোস্ট। এ বিষয়ে হলের প্রভোস্টের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে বেলা দুইটার দিকে গতকালের বিক্ষোভে হামলা ও গুলিতে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন।
এসব ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরপরই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।