পাবনায় পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু

পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে মারা যাওয়া তিন শিশু–কিশোর মরদেহ উদ্ধারের পর স্বজন–গ্রামবাসীদের ভিড়। সোমবার দুপুর ২টার দিকে পাবনা সদরের চরতারাপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনায় পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজন আপন ভাই। সোমবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের ভাদুরিয়া ডাঙ্গী গ্রামের নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া শিশুরা হলো সিয়াম হোসেন (১০), নূর হোসেন (১০) ও সিয়ামের বড় ভাই ছাব্বির হোসেন (১৪)। সিয়াম ও ছাব্বির চরতারাপুর ইউনিয়নের নতুন গোহাইলবাড়ি গ্রামের আলাল হোসেনের ছেলে। নূর হোসেন একই ইউনিয়নের আটঘরিয়াপাড়া গ্রামের ইসলাম সরদারের ছেলে। ছাব্বির নতুন বাজার উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে, সিয়াম গোহাইলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ও নূর হোসেন কাঁচিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা একটার দিকে ছাব্বির, সিয়াম ও নূর হোসেন আরও কয়েকজন শিশু-কিশোরের সঙ্গে পদ্মা নদীতে গোসল করতে যায়। কিছুক্ষণ পর তাদের মধ্যে চারজন পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে জীবিত উদ্ধার করেন। তিনজনকে নিথর অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ছোট ভাইসহ দুই শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে ছাব্বির মারা যায় বলে জানান তাঁরা।

আদরের দুই সন্তানকেই হারিয়ে মা আছিয়া খাতুনের আহাজারি থামছে না। সোমবার দুপুরে পাবনা সদরের চরতারাপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সিয়াম ও ছাব্বিরের বাবা আলাল হোসেন আহাজারি করে বলেন, ‘আমি এখন কেমন করে বেঁচে থাকব। আমি তো একেবারে এতিম হয়ে গেলাম। দুই ছেলে একসঙ্গে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল। একজন বাবার পক্ষে এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’

চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিন শিশু-কিশোরের মৃত্যুতে পুরো গ্রাম এখন শোকার্ত। এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।’

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলী বলেন, একসঙ্গে গোসলে নেমে তিন শিশু-কিশোরের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। এখন নদীতে পানি বৃদ্ধি হচ্ছে, তাই সন্তানদের দেখে রাখতে পরামর্শ দেন ওসি।