জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের ইউএনও শেখ জাহিদ হাসানের নির্দেশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মচারীকে খুঁটির সঙ্গে বেধে রাখা হয়েছে | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি জামালপুর: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসানের নির্দেশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মচারীকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আজ শুক্রবার দুপুরে ইউএনওর প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারীরা।
খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা ব্যক্তির নাম ইকবাল হোসেন। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেওয়ানগঞ্জ জোনাল কার্যালয়ের লাইন টেকনিশিয়ান পদে রয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ইউএনওর নির্দেশে আনসার সদস্যরা তাঁকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। বেঁধে রাখার একটি ভিডিও শুক্রবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের আবাসিক কোয়ার্টারের বেলি-১, হাসনা হেনা-১ ও আনসার ব্যারাকের বিদ্যুতের বিল বকেয়া রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের দেওয়ানগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. শেখ ফরিদের নির্দেশে লাইন টেকনিশিয়ান ইকবাল হোসেন ও লাইনম্যান মো. শাহজামাল নামের দুই কর্মচারী বকেয়া বিলের জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বরে যান। সেখানে দায়িত্বশীল কাউকে না পেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওই দুজন বিষয়টি শেখ ফরিদকে জানান। তখন তিনি বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন।
পরে ইকবাল হোসেন ও শাহজামাল বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি আনসার সদস্যদের জানান। আনসার সদস্যরা বিষয়টি ইউএনওকে জানান। একপর্যায়ে ইউএনওর নির্দেশে আনসার সদস্যরা ইকবাল হোসেনকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশেই আমি ও লাইনম্যান শাহজামাল আনসার ব্যারাকে যাই। সেখানে কর্তব্যরতদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বললে তাঁরা (আনসার সদস্য) ইউএনওকে ফোন দেন। কার নির্দেশে ওখানে গিয়েছি, জানতে চান। একপর্যায়ে ব্যারাকের আনসার সদস্যরা আমাকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে আমাকে ছেড়ে দেন।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য দেওয়ানগঞ্জের ইউএনও শেখ জাহিদ হাসানকে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে জেলা প্রশাসক শফিউর রহমানের মুঠোফোনেও একাধিকবার কলা করা হয়। তিনিও ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল কার্যালয়ের এজিএম শেখ ফরিদ বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ওই ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিতে জামালপুর জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় প্রাঙ্গণে পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। অবস্থান কর্মসূচিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তিন শতাধিক কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় কয়েকজন বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, এটা ইউএনওর কাজ নয়। বিভাগীয় তদন্ত করে তাঁর (ইউএনও) বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।