পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে শরীয়তপুরের সবজি বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বাজারে। সম্প্রতি জাজিরার মিরাশার চাষি বাজারে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি শরীয়তপুর: শরীয়তপুরে দুই বছর ধরে সবজি, পেঁয়াজ ও রসুনের আবাদ বাড়ছে। কৃষকেরা বলেন, ২০২২ সালে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কৃষিপণ্য সহজেই জেলা থেকে ঢাকাসহ অন্য এলাকায় পাঠানো যাচ্ছে। কৃষকেরা দামও ভালো পাচ্ছেন। ফলে কৃষকেরা সবজি, পেঁয়াজ ও রসুনের আবাদ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কৃষি অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুই বছরে সবজি, পেঁয়াজ ও রসুনের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ২ হাজার ৯৬৬ হেক্টর জমিতে। আর তাতে উৎপাদন বেড়েছে ৬৯ হাজার ৩২৯ মেট্রিক টন।
জাজিরা উপজেলার মিরাশার চাষি বাজার শরীয়তপুরের সবচেয়ে বড় কৃষিপণ্য বিক্রির বাজার। ওই বাজারে প্রতিদিন তিন থেকে চার কোটি টাকার সবজি, পেঁয়াজ ও রসুন বিক্রি করেন কৃষকেরা। কৃষকের সবজি বিক্রি করার জন্য বাজারটিতে ৭০টি দোকান রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ী দিদারুল ইসলাম দুই বছর ধরে সবজি কিনতে জাজিরার মিরাশার চাষি বাজারে আসেন। তিনি বেগুন, করলা, শসা, মিষ্টিকুমড়া, পেঁয়াজ ও রসুন কিনে ঢাকায় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, জাজিরার চাষি বাজার থেকে এক ঘণ্টায় যাত্রাবাড়ী পৌঁছানো যায়। অন্য কোনো জেলার সবজির হাট থেকে এত দ্রুত সময়ে ঢাকায় পৌঁছানো যায় না। এ এলাকার সবজির গুণগত মান ভালো থাকায় চাহিদাও রয়েছে।
মিরাশার চাষি বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল জলিল বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল শরীয়তপুরের কৃষক পেতে শুরু করেছেন। শরীয়তপুরের বিভিন্ন সবজির প্রচুর চাহিদা ঢাকায়। যেহেতু ঢাকা থেকে শরীয়তপুর একদম কাছে। তাই পাইকারেরা বাজারের পাশাপাশি মাঠ থেকেও অনেক সময় সবজিসহ অন্য পণ্য কিনে নিয়ে যান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের আগে শরীয়তপুরের উৎপাদিত সবজি, পেঁয়াজ ও রসুন স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি হতো। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকার পাইকারেরা শরীয়তপুরের বিভিন্ন বাজার থেকে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার শরীয়তপুরের কৃষকেরাও ঢাকার বাজারে নিয়ে সবজি বিক্রি করছেন।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০২২ সালে জেলায় ১০ হাজার ৫৮ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়। ওই বছর সবজি উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৭৩ মেট্রিক টন। পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত হয়েছে ৩৯ হাজার ২৯২ মেট্রিক টন। রসুনের আবাদ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত হয়েছে ২৫ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন। এর দুই বছরের ব্যবধানে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সবজির আবাদ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮৬ হেক্টর জমিতে। ২০ জুন পর্যন্ত উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৮০৯ মেট্রিক টন।
জাজিরার বিকেনগর এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম সরদার ৩০ বিঘা জমিতে নানা প্রকার সবজির আবাদ করেন। তাঁর জমিতে উৎপাদিত সবজি ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। ঢাকায় যাওয়ার সময় আশপাশের কৃষকের সবজিও নিয়ে যান। সিরাজুল বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৫৫ বছর। ১৫ বছর বয়স থেকে বাবার হাত ধরে কৃষিকাজ করি। আমাদের উৎপাদিত সবজি ও অন্য ফসল আগে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হতো। লাভের মুখ দেখতে পেতাম না। কিন্তু পদ্মা সেতু হওয়ায় আমরা ঢাকার বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি। এখন আমরা ন্যায্য দাম পাচ্ছি।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে এ অঞ্চলের কৃষি উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। ঢাকা কৃষিপণ্য বিক্রির একটি বড় বাজার। এখানকার কৃষকেরা পদ্মা সেতুর সুফল কাজে লাগিয়ে ওই বাজার ইতিমধ্যে দখল করেছেন। কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে তাঁরা কৃষকদের নানা ধরনের উপকরণ দিয়ে সহায়তা করছেন।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে এখানকার কৃষকেরা তাঁদের পণ্য বিক্রি করার বড় বাজার ধরতে পেরেছেন। এ ছাড়া এ এলাকার সবজির গুণগত মানও ভালো।
ঢাকায় নেওয়ার জন্য বস্তায় ভরা হচ্ছে বেগুন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের আগে শরীয়তপুরের উৎপাদিত সবজি, পেঁয়াজ ও রসুন স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি হতো। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকার পাইকারেরা শরীয়তপুরের বিভিন্ন বাজার থেকে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার শরীয়তপুরের কৃষকেরাও ঢাকার বাজারে নিয়ে সবজি বিক্রি করছেন।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০২২ সালে জেলায় ১০ হাজার ৫৮ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়। ওই বছর সবজি উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৭৩ মেট্রিক টন। পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত হয়েছে ৩৯ হাজার ২৯২ মেট্রিক টন। রসুনের আবাদ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত হয়েছে ২৫ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন। এর দুই বছরের ব্যবধানে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সবজির আবাদ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮৬ হেক্টর জমিতে। ২০ জুন পর্যন্ত উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৮০৯ মেট্রিক টন।
জাজিরার বিকেনগর এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম সরদার ৩০ বিঘা জমিতে নানা প্রকার সবজির আবাদ করেন। তাঁর জমিতে উৎপাদিত সবজি ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। ঢাকায় যাওয়ার সময় আশপাশের কৃষকের সবজিও নিয়ে যান। সিরাজুল বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৫৫ বছর। ১৫ বছর বয়স থেকে বাবার হাত ধরে কৃষিকাজ করি। আমাদের উৎপাদিত সবজি ও অন্য ফসল আগে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হতো। লাভের মুখ দেখতে পেতাম না। কিন্তু পদ্মা সেতু হওয়ায় আমরা ঢাকার বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি। এখন আমরা ন্যায্য দাম পাচ্ছি।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে এ অঞ্চলের কৃষি উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। ঢাকা কৃষিপণ্য বিক্রির একটি বড় বাজার। এখানকার কৃষকেরা পদ্মা সেতুর সুফল কাজে লাগিয়ে ওই বাজার ইতিমধ্যে দখল করেছেন। কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে তাঁরা কৃষকদের নানা ধরনের উপকরণ দিয়ে সহায়তা করছেন।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে এখানকার কৃষকেরা তাঁদের পণ্য বিক্রি করার বড় বাজার ধরতে পেরেছেন। এ ছাড়া এ এলাকার সবজির গুণগত মানও ভালো।