অটোরিকশায় বসে চালককে নির্যাতন করেন সিংড়া থানার এএসআই সেলিম রেজা। বৃহস্পতিবার রাতে | ছবি ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া |
প্রতিনিধি গুরুদাসপুর: নাটোরের সিংড়া-থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সেলিম রেজার বিরুদ্ধে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক হারুন আলীকে (৪০) চড়-থাপ্পড় ও টর্চলাইট দিয়ে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সিংড়া উপজেলা পরিষদ রোড এলাকায় দেশ ফার্নিচার নামের একটি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে।
অটোরিকশাচালক হারুন আলীর বাড়ি সিংড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশা মহল্লায়। তিনি অটোরিকশা চালিয়ে চার সদস্যের সংসার চালান।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হারুন আলী দেশ ফার্নিচারের সামনে আসামাত্রই এএসআই সেলিম রেজা অটোরিকশাটি থামান। চালক কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেলিম রেজাসহ তিন পুলিশ সদস্য অটোরিকশায় ওঠেন। এ সময় অটোরিকশাচালক হারুন আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার, অটোরিকশার মিটারের তার ঠিকমতো কানেকশন পাইতেছে না। এক হাতে তার ধরে অন্য হাতে অটো চালাতে হইতাছে।’
চালকের এমন কথা শুনে এএসআই সেলিম রেজাকে বলতে শোনা যায়, ‘আরে বেটা আমি তো বলছি, তুই যা, একে বায়ে কান ফাটাই ফেলব যা. . যা. . ।’ পরে অটোরিকশাচালককে আরও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। একপর্যায়ে সেলিম রেজা ক্ষুব্ধ হয়ে অটোরিকশাচালকের পিঠে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারেন। হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়েও তাঁর পিঠে ও মাথায় আঘাত করেন। এতে ভয়ে কান্না শুরু করেন হারুন আলী। তাঁর কান্নার শব্দে স্থানীয় কিছু দোকানি ও পথচারীরা এগিয়ে এলেও তাঁরা কেউ প্রতিবাদ করেননি। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে হারুন আলী তাঁর অটোরিকশায় পুলিশ সদস্যদের বহন করে নিয়ে যেতে বাধ্য হন।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য এএসআই মো. সেলিম রেজার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধরেননি। তবে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগটি নানাভাবে শুনেছেন তিনি। তবে অটোরিকশাচালক এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। পৌর শহর এলাকায় পুলিশি টহল থাকে। টহলের জন্য অটোরিকশাটি নিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। তবে ভুক্তভোগী অটোচালকের আপত্তি থাকায় অটোরিকশাটি নেওয়া হয়নি। চালক ও এএসআই সেলিম রেজাকে ডেকে ঘটনা শুনে বিষয়টি সুরাহ করার উদ্যোগ নেবেন তিনি।
অটোরিকশাচালক হারুন আলী বলেন, গরিব মানুষ তিনি। অটোরিকশা চালিয়ে চার সদস্যের সংসার চলে তাঁর। মারধরের শিকার হয়েও পুলিশ সদস্যদের থানায় পৌঁছে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এই অন্যায়ের বিচার কার কাছে চাইবেন।