ঈশ্বরদীতে আয়া-নার্স দিয়ে সন্তান প্রসব নবজাতকের মৃত্যু

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের ‘জমজম স্পেশালাইজড হসপিটাল’ নামে বেসরকারি ওই হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। রাতে চিকিৎসক না থাকায় আয়া-নার্স দিয়ে সন্তান প্রসব করানোয় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। প্রসূতি মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

প্রসূতি নারীর নাম জিমু খাতুন (১৯)। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার মাঝগ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমানের স্ত্রী। তিনি হাসপাতালের অংশীদার চিকিৎসক নাফিসা কবিরের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এ ঘটনায় জিমুর স্বামী বাদী হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ চিকিৎসক নাফিসার বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সাইদুরের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১২টার পর স্ত্রী জিমুকে জমজম স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করান। কিছুক্ষণ পর প্রসববেদনা উঠলে চিকিৎসক নাফিসা কবির স্বাভাবিক ডেলিভারি করানোর জন্য অপেক্ষা করতে বলে বাড়ি চলে যান। রাত পৌনে ৩টার দিকে প্রচণ্ড ব্যথা ওঠে। কিন্তু জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় আয়া সাথী খাতুন ও নার্স সালমা এসে প্রসূতির ডেলিভারির দায়িত্ব নেন। তবে ডেলিভারির পরপরই নবজাতক মারা যায়।

এদিকে নবজাতক মৃত্যুর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালের গেটের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ১০ মার্চ এই হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় আরেকটি নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনাতেও চিকিৎসক নাফিসার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চিকিৎসক নাফিসাকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মালেকুল আফতাব ভূঁইয়া বলেন, ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি কনসালট্যান্ট শামীমা আক্তার বানুকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’