তাঁরা সবাই মৌসুমি কসাই। কোরবানি ঈদে বাড়তি আয় করতে ঢাকায় যাচ্ছেন। গত শুক্রবার রাতে বগুড়ার শেরপুরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি শেরপুর: গত শুক্রবার দিবাগত রাত তখন ১২টা। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ধুনট রোড়ের পাশে ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে দেখা মিলল অন্তত তিন শতাধিক মৌসুমি কসাইকে। তাঁদের কাছে ছিল পশু জবাই এবং কাটা–বাছার সব উপকরণ। যাচ্ছেন ঢাকার পথে। তাঁদের বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। কোরবানি ঈদের সময় তাঁরা মৌসুমি কসাই হিসেবে ঢাকায় গিয়ে বাড়তি আয় করেন। এ রকম বাড়তি আয়ের সঙ্গে জড়িত এলাকার কয়েক শ মৌসুমি কসাই।

ঢাকা যাওয়ার সময় তাঁরা জানান, কোরবানি পশুর দামের ওপর তাঁরা প্রতি ১ হাজার টাকার বিপরীতে মজুরি হিসেবে পান ১২০ থেকে ২০০ টাকা। অন্তত ১০ বছর ধরে কোরবানির ঈদে তাঁরা ঢাকায় যান। ঈদের আগে আগে তাঁরা ঢাকায় প্রবেশ করেন। থাকেন ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল বা বোর্ডিংয়ে। ঈদের পর দিন সন্ধ্যায় তাঁরা বাড়ি ফেরেন।

দলনেতারা বলেন, ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাব, গুলশান, ফকিরেরপুল, বাবুবাজার, রামপুরা এলাকায় অবস্থান করলেই ঢাকার অনেকেই কোরবানি পশুর জবাই ও কাটা বাছাই নিয়ে কাজ করাতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঈদের দিন সকালে তাঁরা চলে যান ওই সব ব্যক্তির বাড়িতে।

কসাই দলনেতাদের একজন রফিকুল ইসলামের বাড়ি শেরপুর শহরের উত্তরসাহা পাড়া মহল্লায়। তাঁর দলে কোরবানি পশুর কাটা বাছার কাজে সহকারী রয়েছেন আরও পাঁচজন। দেখা হয় এমন আরও কয়েকজন দলনেতার সঙ্গে। তাঁদের প্রত্যেকের অধীনে রয়েছে পাঁচজন থেকে সর্বোচ্চ আটজন সদস্য। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার বগুড়ার শেরপুর থেকে ঢাকায় মৌসুমি কসাই হিসেবে যাবেন অন্তত ৩০০ জন।

কসাই দলনেতারা বলেন, ঈদুল আজহার সময় ঢাকায় তাঁদের মতো কসাই দলের অনেক চাহিদা রয়েছে। তাঁরা কসাই হিসেবে গিয়ে পশুর জবাই থেকে শুরু করে কাটা–বাছার সব কাজ করেন। ঈদের দুই দিন এই কাজে সংসারে বাড়তি আয় হয়। অন্তত ১০ বছর ধরে এই কাজ করেন তাঁরা।

দলনেতাদের একজন জহির উদ্দিন জানান, তিনি দল নিয়ে পশু জবাই ও কাটা–বাছার কাজ করবেন ঢাকার মিরপুর ও রামপুরা এলাকায়। তাঁর দলে ছয়জন সদস্য আছেন। ঈদের দুই দিনে সহকারীদের চুক্তিমতো টাকা পরিশোধ করার পরও নিজের হাতে অন্তত ৩০ হাজার টাকা থাকবে বলে আশা করছেন জহির উদ্দিন। তিনি বলেন, ঈদের দিন ও পরের দিন তাঁর দল অন্তত ১০টি কোরবানির পশু জবাই ও কাটা–বাছা করে দেন। শুধু শেরপুর নয়, কোরবানি ঈদকে ঘিরে বগুড়ার অন্যান্য উপজেলাসহ উত্তর জনপদের বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার মৌসুমি কসাই এ সময় বাড়তি আয়ের জন্য ঢাকায় যান।