বগুড়ায় জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার ৪ আসামি রিমান্ডে

গ্রেপ্তার | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়া শহরে ঈদের রাতে জোড়া হত্যাকাণ্ডের মামলার প্রধান আসামি বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহম্মেদ ওরফে মিঠুসহ গ্রেপ্তার চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত বৃহস্পতিবার প্রত্যেক আসামির ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক মো. শাহিনুজ্জামান। আদালতের বিচারক সুশান্ত সাহা সোমবার শুনানি শেষে প্রত্যেক আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক মো. শাহিনুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রিমান্ডে নেওয়া চার আসামি হলেন সৈয়দ কবির আহম্মেদ, বগুড়া শহরের নিশিন্দারা খাঁ পাড়ার শেখ সৌরভ, নিশিন্দারা পূর্ব পাড়ার নাঈম হোসেন ও সুলতানগঞ্জ পাড়ার আলী সোনার লেনের আজবিন রিফাত।

সড়কে প্রাইভেট কার রাখা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বিতণ্ডার জেরে বগুড়া শহরের নিশিন্দারা চকরপাড়া এলাকায় ঈদের রাতে শরীফ শেখ ও তাঁর বন্ধু রুমনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় হোসাইন ওরফে বুলেট নামের আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

এ ঘটনায় নিহত শরীফ শেখের মা হেনা বেগম গত বুধবার বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় কবির আহম্মেদ ছাড়াও তাঁর ভাই বগুড়া শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য সৈয়দ সার্জিল আহম্মেদ, বগুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শাহ মো. মেহেদী হাসানসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধান আসামিসহ এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান আসামি সৈয়দ কবির আহম্মেদকে গত মঙ্গলবার রাতে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন র‍্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যরা। থানায় হত্যা মামলা করার পর তাঁকে বুধবার গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

বাদী হেনা বেগম মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ১৭ জুন ঈদের দিন বিকেলে শহরের নামাজগড় থেকে হাকির মোড় পর্যন্ত সংস্কারকাজ চলা সড়কে আসামি সৈয়দ সার্জিলের প্রাইভেট কারের সঙ্গে শরীফ শেখের বন্ধু ও নিশিন্দারা খাঁ পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে রুমনের (১৭) মোটরসাইকেলে সামান্য ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে সৈয়দ সার্জিল ও তাঁর গাড়িচালকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এর জেরে ঈদের দিন দিবাগত রাত ১২টার দিকে শরীফ শেখ ও তাঁর বন্ধু রুমনকে নিশিন্দারা চকরপাড়া ইউক্যালিপটাস বাগানের গলির মধ্যে ডেকে নিয়ে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় তাঁদের আরেক বন্ধু হোসাইন (১৯) গুলিবিদ্ধ হন।

আসামিরা শরীফ শেখ, রুমন ও হোসাইনকে প্রথমে ঘিরে ধরেন। এরপর সৈয়দ কবির আহম্মেদের নির্দেশে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে অন্য আসামিরা কুপিয়ে শরীফ ও রুমনকে হত্যা করেন। আসামি সৈয়দ কবির আহম্মেদের পিস্তলের গুলিতে হোসাইন গুলিবিদ্ধ হন। সৈয়দ সার্জিল তাঁর হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে শরীফ শেখের মাথায় ও বাঁ কাঁধে কোপ দেন। অন্য আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীফ ও রুমনকে উপর্যুপরি কুপিয়ে, পায়ের রগ কেটে হত্যা নিশ্চিত করেন। হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান।