পাবনা প্রেসক্লাবে বন্ধুর সঙ্গে আড্ডায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার সন্ধ্যায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি পাবনা: চার দিনের সফরে পাবনায় অবস্থান করছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সফরের দ্বিতীয় দিনে সোমবার সন্ধ্যায় তিনি তাঁর স্মৃতিবিজড়িত পাবনা প্রেসক্লাবে বন্ধু ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন। এ সময় তিনি স্কুলজীবন, সাংবাদিকতা জীবন ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কিছু মধুর স্মৃতিচারণা করে হাসি-ঠাট্টায় মাতেন।
একই সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিনের প্রিয় আলুর চপ, শিঙাড়া, পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে চিড়াভাজি ও লুচি-আলুর দম খান। খেতে খেতে বললেন, ‘সেই স্বাদ আজও পাই।’
আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পাবনা প্রেসক্লাবে পৌঁছান। ঘণ্টাখানেক তিনি প্রেসক্লাবের বন্ধু ও কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি ছাত্রজীবনের রাজনীতি, সাংবাদিকতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কিছু স্মৃতিচারণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্কুলজীবন ও সাংবাদিকতা জীবনের বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, প্রবীণ শিক্ষক শিবজিৎ নাগ, রাজনৈতিক বন্ধু রেজাউল রহিম, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ প্রমুখ।
পাবনা প্রেসক্লাবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, পাবনা প্রেসক্লাবে তাঁর স্মৃতির শেষ নেই। একসময় ক্লাবের ছাদে বসে আড্ডা দিতেন। রাষ্ট্রপতির শপথ নেওয়ার আগেও পাবনায় এলে তিনি ক্লাবে ছুটে আসতেন। তাই এখনো তিনি পাবনায় এলে প্রেসক্লাবে আসেন।
পাবনা প্রেসক্লাবে পৌঁছানোর পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান প্রেসক্লাবের নেতারা। সোমবার সন্ধ্যায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সাংকেতিকভাবে ‘বাঘ’ বলতেন। একদিন বিকেলে তাঁর বন্ধু রেজাউল রহিম বললেন, বাড়িতে থাকা যাবে না, ‘বাঘ’ আসতে পারে। পরে তাঁরা দুই বন্ধু বাড়ির পাশের একটি ভাঙা টিনের ঘরে রাতে ঘুমান। একপর্যায়ে রাতে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। টিনের চালে তখন গাছের ঘষা লেগে বিকট শব্দ হচ্ছিল। পাশে থাকা বন্ধুটি জেগে বলেন, ‘বাঘ’ আসছে। এতে তিনিও ঘাবড়ে যান। পরে বুঝতে পারেন, টিনের চালে গাছের ঘষা লাগছে। তখন দুই বন্ধু হেসে ওঠেন।
স্মৃতিচারণা শেষে তিনি প্রতিবার প্রেসক্লাবে এসে যেসব খাবার খান, সেগুলো চেখে দেখেন। এ সময় তাঁকে তাঁর পছন্দের শিঙাড়া, আলুর চপ, কাঁচা পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে চিড়াভাজা এবং লুচি ও আলুর দম দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল রোববার নিজ জেলা পাবনায় আসেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণের পর নিজ জেলায় এটি তাঁর চতুর্থ সফর। সফরে তিনি জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ১২ জুন বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে পাবনা থেকে হেলিকপ্টারে করে তাঁর ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, পাবনা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৬১ সালে। এরপর দীর্ঘ ৬৩ বছর জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা একই ছাদের তলায় আছেন। প্রেসক্লাবটি প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পর থেকেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ক্লাবে আসতে শুরু করেন। তিনি ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকায় সাংবাদিকতার সুবাদে পাবনা প্রেসক্লাবের ২২তম সদস্য হন। বর্তমানে তিনি ক্লাবটির আজীবন সদস্য।