এ কে আব্দুল মোমেন | ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে, এতে জনগণের হয়রানি বাড়ছে। অল্পসংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ আমলার জন্য সারা আমলাতন্ত্র বদনামের ভাগীদার হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বার্ষিক হিসাব বাধ্যতামূলক করা এখন সময়ের দাবি। কিছুসংখ্যক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এসব ব্যাপারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে দুর্নীতি কমবে।
আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বিদেশে বেশি অর্থ পাচার করেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
কানাডার টরন্টোয় বাড়ি করা বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়ে ওই অনুষ্ঠানে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাঁদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে।’
সেদিন আব্দুল মোমেন আরও বলেছিলেন যে টাকা পাচারের (কানাডায়) তথ্য পাওয়া ২৮টি ঘটনার মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীই বেশি।
যদিও টাকা পাচার করা সেই ২৮ জনের নাম এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেনি আওয়ামী লীগ সরকার।
বেহাল ব্যাংক
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থান, রাজস্ব বৃদ্ধি, রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ও প্রশাসনের হয়রানি নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বড় প্রশ্ন রয়েছে বলেও গতকাল সংসদে উল্লেখ করেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই ব্যাংক খাতের অবস্থা খারাপ। বাজেটে এর প্রতিকারের কথা থাকলে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো। বরং বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকাকে সাদা করার ঘোষণায় যাঁরা সৎ করদাতা, তাঁরা হতাশ হয়েছেন। কালোটাকা সাদা করার সুযোগের পরিমার্জন প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, দুর্নীতির কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ হয় না, এতে খরচ ও জনগণের হয়রানি বাড়ে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, দেশে যথেষ্ট কর্মসংস্থান না থাকায় প্রতিবছর হাজার হাজার কর্মক্ষম মানুষ বৈধ ও অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। কর্মসংস্থান বা উদ্যোক্তা সৃষ্টি সাধারণত বেসরকারি খাতে হয়ে থাকে। সে জন্য তাদের যথেষ্ট ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। এবারের বাজেটে বাজেট–ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকার ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে। এর অর্থ হলো, বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা ঋণ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
এখন জনগণ পুলিশের কাছে যায়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, একসময় মানুষ পুলিশ দেখলে ভয় পেত। এখন পুলিশ সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গায় চলে এসেছে। যেকোনো ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ হাজির হচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি নিয়ে হাজির হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ এখন জনগণের সেবক হয়েছে। এখন জনগণ পুলিশের কাছে যায়। একইভাবে এলিট ফোর্স র্যাব তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতার মাধ্যমে জনগণের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের কারণে জঙ্গি দমন সম্ভব হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, যাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাঁদের সুনির্দিষ্ট অপরাধে, অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যারা সন্ত্রাস করে, রাজনৈতিক ইশারায় যারা সন্ত্রাস করে, তাদের ধরা হচ্ছে।