ঈশ্বরদীতে কোরবানির পশুর হাট সরবরাহ পর্যাপ্ত, বিক্রি কম

আশানুরূপ দাম না পেয়ে অনেক খামারি হাট থেকে বাড়িতে গরু নিয়ে গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম পাবনা ঈশ্বরদী অরণকোলা সাপ্তাহিক পশুর হাটে গরু–মহিষ এসেছিল প্রচুর। তবে সেই তুলনায় বাইরে থেকে ব্যাপারী ও ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন কম। আশানুরূপ দাম না পেয়ে অনেকেই গরু–মহিষ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন।

এখানে প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার হাট বসে। বৃহৎ এই পশুর হাটে মূলত দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যাপারী ও ব্যবসায়ীরা মূল ক্রেতা। মঙ্গলবার তাঁদের সংখ্যা ছিল কম। তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় প্রতিটি পশুর দাম ২০–৩০ শতাংশ বেশি চাওয়া হয়েছে। তবে খামারিদের দাবি, গত বছরের তুলনায় পশুখাদ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। প্রতিটি গরু লালন–পালন করতে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ খরচ হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে হাটে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক হাজার গরু, মহিষ ও কয়েকটি ভেড়া আছে। মিনিট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যানবাহন লাটাহাম্বার, আলমসাধুতে করে খামারিরা গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া নিয়ে আসছেন। হাটের জায়গায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঈশ্বরদী-পাবনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর পশু রাখা হয়েছে। বিকেল পাঁচটার পর থেকে অনেককে পশু নিয়ে হাট থেকে ফিরে যেতে দেখা যায়।

লালপুর বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন গ্রামের গরুর খামারি হাজ্জাদ আলী জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর পশুখাদ্যের দাম অনেক বেশি। গত বছর গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। এ বছর তা ৭৫০–৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির গরু বিশেষ যতেœ লালন-পালন করা হয়ে থাকে। তাই ৮০০ টাকা কেজি হিসাবে গরু বিক্রি করলে খামারিদের লোকসান হবে। তাই অনেকে গরু ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

কথা হয় সুবারেক আলী ও বরকত আলী নামের দুই ব্যাপারীর সঙ্গে। তাঁদের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার চক পেলানপুর গ্রামে। তাঁরা দুজন ১২ বছর ধরে যৌথভাবে গরু বেচাকেনা করছেন। সুবারেক জানান, নিজ গ্রাম থেকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় কেনা গরুটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। গরু কেনার পর তার খাবার ও হাটে আনার ভাড়া মেটানোর পর লাভ হয়নি।

ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের জীবন মিয়া নামের আরেক ব্যাপারী বলেন, সকালে পাঁচটা গরু নিয়া এসেছি। কিছুক্ষণ আগে ছোট একটা গরু বিক্রি করছি এক লাখ পাঁচ হাজার টাকায়। বাকিগুলো মনে হয় বেছতে পারবো না। তাই বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।ক্রেতার বিপরীতে বিক্রেতারা বলছেন, এবার পশুর বাজার চড়া। সামাদ মিয়া (৫০) নামের এক ক্রেতা বলেন, হাটে এসেছি ঘুরে ঘুরে গরুর দাম দেখছি। মনে হচ্ছে দাম চড়া। 

অরণকোলা সাপ্তাহিক পশুর হাটে প্রচুরসংখ্যক গরু বিক্রির জন্য আনা হয়েছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন    

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, একটি ইউনিয়নে পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়। পাবনা জেলা জুড়ে কোনো না কোনো স্থানে পশুর হাট বসছে। এতে স্থায়ী হাটের ওপর চাপ কমেছে।

অরণকোলা পশুর হাটের ইজারাদার মিজানুর রহমান রুনু মন্ডল বলেন, ঈদের আগে শেষ হাটে পশু ভালোই উঠেছিল। তবে কাক্সিক্ষত বেচাকেনা হয়নি।