লাশ | প্রতীকী ছবি

প্রতিনিধি ফরিদপুর: ফরিদপুর ফরিদপুর সদরের নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের দুর্গম চরে বিষধর রাসেলস ভাইপারের কামড়ে হোসেন ব্যাপারী (৫০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তাঁকে সাপটি কামড় দেয়। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ছাড়া পাশের ডিক্রির চর ইউনিয়নে দুই দিনে দুটি রাসেলস ভাইপার দেখতে পেয়ে পিটিয়ে মেরেছেন গ্রামবাসী।

রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা যাওয়া হোসেন ব্যাপারী উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশ উল্লাহ ব্যাপারীর ছেলে। ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, গতকাল দুপুরের দিকে হোসেন ব্যাপারীকে একটি রাসেলস ভাইপার কামড়ায়। দ্রুত তাঁকে ট্রলারে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তার আগেই আজ বেলা ১১টার দিকে মারা যান তিনি।

এদিকে আজ দুপুর ১২টার দিকে নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চরধোলাইতে খেতে কাজ করার সময় একটি রাসেলস ভাইপার দেখতে পান মুরাদ মোল্লা (৪৫) নামের এক কৃষক। তিনি ডিক্রির চর ইউনিয়নের আইজ উদ্দীন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা। পরে তিনি সাপটি পিটিয়ে মেরে সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় নিয়ে আসেন।

মুরাদ মোল্লা বলেন, ‘বাদামের জমিতে কাজ করার সময় সাপটি নজরে পড়ে। এরপর লাঠি এনে তিন-চারটি বাড়ি মেরে সাপটি মেরে ফেলি।’

এর বাইরে একই ইউনিয়নে পৃথক আরেকটি রাসেলস ভাইপার মারার তথ্য নিশ্চিত করেন ডিক্রির চর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, গতকাল দুপুরে ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর পাশে একটি রাসেলস ভাইপার দেখে পিটিয়ে মারেন এলাকাবাসী।

সমালোচনার মুখে পুরস্কারের ঘোষণায় পরিবর্তন
গতকাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভায় রাসেলস ভাইপারের উপদ্রবে চরাঞ্চলের মানুষের উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে রাসেলস ভাইপার মারতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কেউ একটি রাসেলস ভাইপার মারতে পারলে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। যতগুলো সাপ মারবে, ততবার এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এ ঘোষণা ছিল ২০১২ সালে প্রণীত বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই আইনে সরীসৃপ (সাপজাতীয়) কোনো প্রাণী হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে। 

শাহ মো. ইশতিয়াক তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করে আজ দুপুরে বলেন, ওই ঘোষণা যখন দেন, তখন এ–সংক্রান্ত আইন সম্পর্কে তাঁর জানা ছিল না। তা ছাড়া এটি কোনো খোলা জনসভা ছিল না, ছিল জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির ঘরোয়া সমাবেশ। তবে এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে একটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। সেখানে বলা হবে, রাসেলস ভাইপার জীবিত অবস্থায় ধরে বন বিভাগের কাছে সোপর্দ করা হলে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।