ঈশ্বরদীতে উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু

জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল। শনিবার সকালে ঈশ্বরদী শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদীতে একই হাসপাতালের বিরুদ্ধে বারবার ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর পাশে অবস্থিত বেসরকারি জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামে এক প্রতিষ্ঠানে নবজাতক মারা যান।

প্রসূতি নারীর নাম জিমু খাতুন। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার মাঝগ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমানের স্ত্রী। এছাড়াও চিকিৎসকের অবহেলায় চলতি বছরের ৩ মার্চ প্রসূতি সরাত জাহান সিন্তার ছেলে ও ১০ মার্চ রাজিব হোসেন ও হাসিনা খাতুন  দম্প্রতির ছেলে নবজাতকের একই কারণে মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার এ ধরনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে এই হাসপাতালটির বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা গুলোতে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

সাইদুরের অভিযোগ, গত শুক্রবার রাত ১২টার পর স্ত্রী জিমুকে জমজম স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করান। কিছুক্ষণ পর প্রসববেদনা উঠলে চিকিৎসক নাফিসা কবির স্বাভাবিক ডেলিভারি করানোর জন্য অপেক্ষা করতে বলে বাড়ি চলে যান। রাত পৌনে ৩টার দিকে প্রচণ্ড ব্যথা ওঠে। কিন্তু জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকায় আয়া সাথী খাতুন ও নার্স সালমা এসে প্রসূতির ডেলিভারির দায়িত্ব নেন। তবে ডেলিভারির পরপরই নবজাতক মারা যায়।

এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মালেকুল আফতাব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি কনসালট্যান্ট শামীমা আক্তার বানুকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক বলছেন, আইসিইউ নেই ও সরকারের গাইডলাইন অনুসরণ করছে না এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাহলে তারা অপারেশন করতে পারে কি ভাবে?

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ভূল চিকিতসায় রোগীর মৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা। আগে কখনো ভুল চিকিতসা ও অবহেলার অভিযোগে এতো মৃত্যু দেখিনি। এই ধরনের মৃত্যু রোধ করতে যা যা করার প্রয়োজন, তাই করবো। কারণ চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেবো। কোন মৃত্যুই আমাদের কাছে কাম্য নয়। 

এসব বিষয়ে জানতে হাসপাতালের অংশীদার চিকিৎসক নাফিসা কবিরকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদের সঙ্গে পাঁচ—ছয়বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন।