নাটোরের মেয়ে ফাতেমা খাতুন ও চীনের যুবক লি সি জাং। গত বৃহস্পতিবার তাঁরা বিয়ে করেছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি নাটোর: চীনা অ্যাপ উই চ্যাটে তাঁদের পরিচয়। মেয়েটি বাংলাদেশের নাটোরের, ছেলেটি চীনের সাংহাইয়ের। কেউ কারও ভাষা জানেন না। প্রথম আলাপটা হয়েছিল ইংরেজিতে। আলাপ থেকে পরিচয়, তা থেকে সম্পর্ক প্রণয়ের দিকে গড়ায়। কথা বলার প্রয়োজনেই মেয়েটি শিখে নেন চীনা ভাষা। এরপর ছেলেটি চলে আসেন নাটোরে। গত বৃহস্পতিবার তাঁদের বিয়ে হয়েছে।

মেয়েটির নাম ফাতেমা খাতুন। তিনি নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। ফাতেমা নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর ছেলেটির নাম লি সি জাং। তিনি নিজেকে চিকিৎসক বলে দাবি করেছেন।

ফাতেমার পরিবার জানিয়েছে, এই তরুণীর সঙ্গে চীনা যুবকের সম্পর্ক ছয় মাস ধরে। এরপর তাঁদের বন্ধুত্ব হয়, তারপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চীন থেকে ফাতেমাদের বাড়িতে আসেন লি সি জাং। তিনি বৌদ্ধধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর নতুন নাম আলী। এরপর সন্ধ্যায় সাত লাখ টাকা কাবিনে ইসলামি রীতিতে ফাতেমার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এরপর গতকাল রোববার আদালতে গিয়ে বিয়ের নিবন্ধন করেন তাঁরা।

ফাতেমা খাতুন আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে ভালোবেসে লি সি জাং বাংলাদেশে এসেছেন। সে তাঁর জন্য নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছেন। সুখে-দুঃখে তাঁরা একসঙ্গে থাকতে চান। তিনি স্বামীর সঙ্গে তাঁদের দেশে (চীন) চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

লি সি জাং ওরফে আলী ইংরেজিতে বলেন, ‘আমি খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষের জন্য ধর্ম পরিবর্তন করেছি। আমি আশাবাদী, আমার ভালোবাসার মানুষ সারা জীবন পাশে থাকবে।’

লি সি জাং নিজেকে চীনের সাংহাইয়ের বাসিন্দা ও চিকিৎসক বলে দাবি করেছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

লি সি জাংয়ের জন্য ফাতেমা কয়েকবার বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তাঁর বাবা আবু তাহের। তিনি বলেন, নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে চেয়েছেন, তাই বৃহস্পতিবার ধর্মীয় বিধানে তাঁদের বিয়ে পড়ানো হয়েছে। রোববার আদালতের মাধ্যমে বিয়ের নিবন্ধন করা হয়।

নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বলেন, ‘মোবাইলের মাধ্যমে সম্পর্কের পর তাঁদের বিয়ে হয়েছে বলে জেনেছি। মেয়েটি শিক্ষিত, আগে থেকেই ভাষা শিখত। বিদেশ থেকে ছেলে বা মেয়েরা এসে বাংলাদেশে বিয়ে করছে, এ ঘটনা বিভিন্ন এলাকায় ঘটলেও আমাদের এলাকায় প্রথম।’