জনপ্রতিনিধিদের বলেও কাজ না হওয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কার

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শুভগাছা-জয়নগর সড়কে দুর্ভোগ কমাতে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সড়কের কাজে নেমেছেন গ্রামবাসী। বুধবার উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের জয়নগর উত্তরপাড়া গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি শেরপুর: কাঁচা সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত। কোথাও হাঁটুসমান কাদা। বর্ষা মৌসুমের আগেই সড়কটি সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন গ্রামবাসী। তবে তাতে কাজ না হওয়ায় নিজেরাই নেমেছেন সড়ক সংস্কারে। ১০০ জন মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেরাই ইটের টুকরা ও বালু ফেলে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের চলাচলের অযোগ্য অংশগুলো ঠিক করে ফেলেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নে। স্থানীয় শুভগাছা বাজার থেকে জয়নগর উত্তরপাড়া গ্রাম পর্যন্ত এক কিলোমিটার দূরত্বের এই সড়কের ৩০০ মিটারের বেশি অংশেই গর্ত ও কাদা ছিল।

সড়কটি সংস্কারে স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নিয়েছেন শুভগাছা উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। তিনি  বলেন, গ্রামের সবাই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য সবাইকে এই সড়কের ওপর দিয়েই শহরের বাজারে যেতে হয়। শুভগাছা, জয়নগর উত্তরপাড়াসহ ১২টি গ্রামের মানুষ এই মাটির সড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন। এক কিলোমিটার এই সড়কের ৩০০ মিটার ছোট–বড় অসংখ্য গর্তে ভরা। একটু বৃষ্টি হলেই গর্তগুলোতে হাঁটুসমান কাদা হয়। এ সময় মানুষ চলাচল করতে পারে না। এলাকার কৃষকদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। কয়েক যুগ ধরে এই দুর্ভোগ নিয়ে স্থানীয় ইউপি জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও কোনো উপকারে আসেনি।

স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেওয়া শুভগাছা গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় (এলজিইডি) থেকে এই সড়কে  উন্নয়নকাজ হবে; কিন্তু দুর্ভোগ বাড়লেও সড়ক উন্নয়নের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ এগিয়ে আসেনি। এ কারণে গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে ইট ও বালু কিনে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সড়কে ইট বিছিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করছেন।’

উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) কার্যালয় শুভগাছা-জয়নগর কাঁচা সড়কের ৬০০ মিটার পাকাকরণের উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে খামারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মমিন বলেন, এ জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যত দ্রুত এগিয়ে আসবে, ততই ওই সড়কে চলাচলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বলেন, গত এপ্রিলে ওই সড়ক পাকাকরণের কার্যাদেশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেন দ্রুত কাজ শুরু করে, এ জন্য প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।