গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সাভানা ইকোরিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক | ছবি: সাভানা রিসোর্টের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

প্রতিনিধি গোপালগঞ্জ: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পার্কের প্রধান ফটকের পাশে মাইকিং করে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যৌথভাবে এ ঘোষণা দেয়। ফলে আদালতের নির্দেশে আজ থেকে পার্কের কর্তৃত্ব থাকবে জেলা প্রশাসনের হাতে।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাবলী শবনম বলেন, ‘গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমি আদেশ কার্যকর করার জন্য এখানে উপস্থিত হয়েছি এবং আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। এখন থেকে এ সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক জেলা প্রশাসক।’

দুদক গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘আজ সকাল থেকে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুত করা হবে ও সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হবে। এর পর থেকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় পার্কের সব কার্যক্রম চালু থাকবে। আয়-ব্যয়সহ জনবল নিয়োগ ও দর্শনার্থী প্রবেশের বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেবেন জেলা প্রশাসক।’

গতকাল রাতে পার্কের দায়িত্ব গ্রহণের ঘোষণার সময় স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হন। এ সময় অনেককে উল্লাস করতে দেখা যায়। বাদল বল (৫০) নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ডিসি স্যার পার্কের দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আমরা আশা করি সরকারি রাস্তা দিয়ে আমরা আমাদের জমি ও পুকুরে যেতে পারব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালে র‍্যাবের মহাপরিচালক এবং ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আইজিপি থাকার সময়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ বিঘা (দুদকের তথ্য অনুযায়ী) জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। এ রিসোর্ট ও পার্কের সব জমি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের ভাষ্য, ভয় দেখিয়ে, জোর করে ও নানা কৌশলে জমি কেনা হলেও অনেক জমি দখল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করে। পরে আদালত সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।