লডারহিলে মাঠ পরিদর্শনে দুই আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা (বাঁয়ে) ও রড টাকার | আইসিসি |
খেলা ডেস্ক: ফ্লোরিডার লডারহিলে বৃষ্টি, বন্যার শঙ্কা আগে থেকেই ছিল। এর মধ্যেই এ মাঠে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি বজ্রবৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছে। আবহাওয়া এতটাই খারাপ ছিল যে সেন্ট্রাল বোয়ার্ড পার্কের মাঠ কাভারে ঢাকা থাকায় টস করাও সম্ভব হয়নি। খেলা না হওয়ায় ১২ জুন নেপালের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে লঙ্কানদের, তাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ ‘ডি’ থেকে সুপার এইটের দৌড় থেকেও কার্যত ছিটকে পড়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দল।
একই দুর্ভাগ্যের শিকার হলো সাবেক বিশ্বকাপজয়ী ও গতবারের রানার্সআপ দল পাকিস্তানও। নিজেদের প্রথম ৩ ম্যাচের মধ্যে ২টি হেরে যাওয়ায় বাবর আজমরা লডারহিলে যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ডের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। গ্রুপ ‘এ’-এর পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্র জিতলেই পাকিস্তান বাদ—সমীকরণ ছিল এমন। ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও সুপার এইটের আশা শেষ হয়ে যেত পাকিস্তানের। হলোও তা-ই।
লডারহিলে প্রথমে ভেজা আউটফিল্ড ও পরে বৃষ্টির কারণে শেষ পর্যন্ত টসই হয়নি ম্যাচের। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডকে। তিন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ, রড টাকার ও রিচার্ড কেটেলবরো দফায় দফায় মাঠ পরিদর্শনের পর গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। শেষ দফা মাঠ পরিদর্শনে ছিলেন ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথও।
গ্রুপ ‘এ’-তে আপাতত ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট যুক্তরাষ্ট্রের, ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট ভারতের। এই দুই দলই যাচ্ছে সুপার এইটে। পাকিস্তানের পয়েন্ট ৩ ম্যাচে ২, আয়ারল্যান্ডের ৩ ম্যাচে ০ ও কানাডার ৩ ম্যাচে ২। সম্ভাবনা শেষ এ তিন দলেরই।
অন্যদিকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে এসে সুপার এইটে জায়গা করে নিল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। কানাডাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে তাদের বিশ্বকাপযাত্রা শুরু হয়। এরপর পাকিস্তানকে হারিয়ে পুরো ক্রিকেট–বিশ্বকে চমকে দেয় মোনাঙ্ক প্যাটেলের দল। ভারতের বিপক্ষেও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল স্বাগতিকেরা। কাল আইরিশদের বিপক্ষে তো ভাগ্যও তাদের পক্ষে এল।
অন্যদিকে ভাগ্য পক্ষে ছিল না পাকিস্তানের। অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইমরান খানের পাকিস্তানের জন্যই আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল বৃষ্টি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৭৪ রানে অলআউট হয়ে গিয়েও বৃষ্টির কারণে ১ পয়েন্ট পেয়েছিল পাকিস্তান। যে পয়েন্ট পরে বড় ভূমিকা রেখেছিল পাকিস্তানের সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করায়। এরপর তো সেবার শিরোপাই জেতে পাকিস্তান। এবার সেই বৃষ্টিই কেড়ে নিল পাকিস্তানের শেষ আশা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচিতে লডারহিলে ৪টি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। শ্রীলঙ্কা-নেপালের পর যুক্তরাষ্ট্র-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ দুটি তো গেলই। ভারত-কানাডার পর পাকিস্তান-আয়ারল্যান্ড দিয়ে বিশ্বকাপের ফ্লোরিডা পর্ব শেষ হওয়ার কথা।
যে আবহাওয়া, তাতে বাকি দুটি ম্যাচও বৃষ্টিতে ভেসে যেতে পারে। গতকাল পাকিস্তান দলের লডারহিলে অনুশীলন করার কথা ছিল; কিন্তু আবহাওয়ার কারণে অনুশীলনের সঙ্গে ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনও বাতিল করে দেয় দলটি। পাকিস্তান দলের পক্ষ থেকে থেকে জানানো হয়, ‘ভেজা কন্ডিশন ও সুযোগ–সুবিধা না থাকায় আজ (গতকাল) অনুশীলন হচ্ছে না।’
লডারহিলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৪টি ম্যাচের ১টিও না হলে অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টস ছাড়াই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার রেকর্ডে নাম বসাবে ফ্লোরিডার এই মাঠ। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) ২০২২ সালের সর্বশেষ আসরে টানা ৩ ম্যাচ টস করার আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এবার সে সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে না তো?