হাট থেকে কোরবানির গরু নিয়ে যাচ্ছেন রবিন হোসেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মেরাদিয়া হাট থেকে কোরবানির গরু কিনে বনশ্রী ‘এ’ ব্লকের বাসার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ইমপেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী রবিন হোসেন। সঙ্গে তার বাবা, বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক; সঙ্গে পদ্মা ট্রিবিউন- এর প্রতিবেদক। হাট থেকে বাসার দূরত্ব প্রায় ৮০০ মিটার। পুরো পথে ৩৭ জন পথচারী জিজ্ঞেস করেছিলেন—মামা, দাম কত; ভাই, দাম কত; চাচা, দাম কত?
এসময় রবিন, তার বাবা, ও বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক সবাইকে দাম বলছে ১৫০ (মানে দেড় লাখ টাকা)। রবিনের ভাষ্য গরু কিনে যদি দামটা যদি গরুর গায়ে লেখা যেত, তাহলে ভালোই হতো!
কলেজ-শিক্ষার্থী রবিনের মত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত মেরাদিয়া হাট থেকে যারাই গরু কিনে হাট থেকে বের হচ্ছেন সবার বক্তব্য প্রায় একই। বিশেষ করে কোরবানির গরু কেনার পরে পথচারীরা সবাই ‘দাম কত’ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। সবার উত্তর থাকে একই। এখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া; অনেককে বিরক্ত হতে দেখা যায় না, আবার কেউ কেউ এক প্রশ্ন বারবার শুনে বিরক্তও হচ্ছেন।
বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা আজগোর হোসেন। মেরাদিয়া হাট থেকে গরু কিনে রওনা হয়েছেন বাসার উদ্দেশে। হাটে ব্যাপারীর সাথে গরুর দামাদামিতে বেশ বিরক্ত। একদিকে গরমে গায়ে গামে ভেজা গেঞ্জি, অন্যদিকে পথ জুড়ে পথচারীদের ‘দাম কত’ প্রশ্নে বিরক্ত। তিনি বলেন, বাজেটের বাইরে গিয়ে এমনিতে কিনতে হয়েছে গরু, তার ওপর তীব্র গরম, এরপর মানুষের প্রশ্ন—‘দাম কত ভাই?’
মেরাদিয়া হাটের প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায়, এই হাট থেকে যারাই গরু কিনে বের হচ্ছেন, তাদের প্রত্যেককে পথচারীরা জিজ্ঞেস করছেন—মামা, দাম কত; ভাই, দাম কত; চাচা, দাম কত?
এদিকে মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা যায়, এবার কোরবানির ঈদেবেশি চাহিদা রয়েছে মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর। যে কয়েকটি খণ্ডে বড় গরু রয়েছে সেখানে ক্রেতার উপস্থিতি অনেক কম। ক্রেতারা বলছেন, ছোট গরুর চাহিদা বেশি থাকায় দামও চাচ্ছেন ব্যাপারীরা।
আসন্ন কোরবানির ঈদের রাজধানীতে গরুর চাহিদা মেটাতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে দুই সিটি করপোরেশন ২০টি গরুর হাট ইজারা দিয়েছে। তারমধ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আওতাধীন ১১টি পশুর হাট আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আওতাধীন ৯টি পশুর হাট রয়েছে।
হাটের বেচাকেনা নিয়ে মেরদিয়া হাটের ইজারাদার আবু সাঈদ বলেন, পুরো বাজার গরু-ছাগলে পরিপূর্ণ। আমাদের মেরাদিয়া হাটে এখনও পশু আসছে। আজকে ছুটির দিন হওয়ায় এখানে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি। বিক্রিও হচ্ছে। তবে আগামীকাল থেকে বিক্রি আরও বাড়বে। এই হাটে সিটি করপোরেশনের ২০০ ভলান্টিয়ার এবং আমাদের পক্ষ থেকেও লোকবল নিয়োগ আছে। ক্রেতার উপস্থিতি বাড়াতে আমরা আশপাশের এলাকায় মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছি।