সর্বোচ্চ ৩২ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন নাজমুল হোসেন | এএফপি |
খেলা ডেস্ক: প্রথম লক্ষ্য সুপার এইট, এরপর যা হবে সবই ‘বোনাস’। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে কথাটা খেলোয়াড়দের চাপ কমাতেই বলে থাকবেন। তবে মুখে যা-ই বলুন না কেন, শেষ আটে উঠে শেষ চারের স্বপ্ন দেখাটাই স্বাভাবিক। সে স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে গতকাল ভারতের বিপক্ষে জেতার বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। কিন্তু তা আর হলো না। ভারতের ৫ উইকেটে করা ১৯৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে করেছে ১৪৬ রান। ৫০ রানের বড় হারে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে এল।
রান তাড়ায় যেমন শুরু দরকার ছিল, সেটা এনে দিতে পারেননি বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান। দুজনই শুরুর তিন ওভারে দেখে খেলেছেন। পরে যখন মারার চেষ্টা করেছেন, তখন আউট হয়েছেন। শুরুটা হয় লিটনকে দিয়ে। হার্দিক পান্ডিয়ার করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে পুল শটে ছক্কা মারেন তিনি। পরের বলটি পান্ডিয়া করেন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে। সে বলেও লেগের দিকে টেনে মারতে গিয়ে ১০ বলে ১৩ রান করে ক্যাচ আউট হন লিটন। ক্রিজে সময় কাটিয়ে সেরা ছন্দে খুঁজে পাননি আরেক ওপেনার তানজিদও। ইনিংসের দশম ওভার পর্যন্ত ক্রিজে থেকেও তাঁর রান ৩১ বলে ২৯। কুলদীপ যাদবের বলে লেগের দিকে মারতে গিয়ে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন তিনি।
যা একটু রান করার, তা করেছেন তিনে নামা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। ৩২ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪০ রান করে বাংলাদেশের ইনিংসটাকে দীর্ঘ করতে সাহায্য করেন তিনি। ব্যর্থ হয়েছেন তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, জাকের আলী। শেষের দিকে রিশাদ হোসেন ৩ ছক্কায় ১০ বলে ২৪ রান করলে বাংলাদেশের রান দেড় শর কাছাকাছি পৌঁছায়। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ, ২টি করে উইকেট বুমরা ও অর্শদীপের।
ভারতকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু এনে দেয় রোহিত-কোহলির জুটি। দুজন মিলে ৩.৪ ওভারে ৩৯ রান তুলে ফেলেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে সাকিব আল হাসান এসে রোহিতকে থামান (১১ বলে ২৩ রান)। রোহিতকে বিদায় করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। তাতে অবশ্য রানের গতি কমেনি। চার-ছক্কায় ভারতের পাওয়ারপ্লের রানটাকে কোহলি ৫৩-তে নিয়ে যান। পরের উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ইনিংসের নবম ওভার পর্যন্ত। তানজিম হাসান তাঁর দ্বিতীয় ওভার করতে এসে অফ কাটারে বোল্ড করেন কোহলিকে (২৮ বলে ৩৭ রান)।
তানজিম সেখানেই থামেননি। কোহলির বিদায়ের পর ক্রিজে আসা সূর্যকুমার যাদব প্রথম বলেই পুল শটে ছক্কা মারেন। তানজিমের লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা পরের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে থামে সূর্যকুমারের (৬) ইনিংস। দ্রুত ২ উইকেট হারালেও পন্ত ভালো শুরু পেয়ে যান। তাঁকে থামান ১২তম ওভারে বোলিংয়ে আসা রিশাদ। সেই ওভারের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে লেগের দিকে ছক্কা ও চার মারার পরের বলে রিভার্স সুইপে অফের দিকে মারার চেষ্টা করেন পন্ত। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় বল চলে যায় থার্ড ম্যানে থাকা তানজিমের হাতে। ২৪ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ রানে থামে তাঁর ইনিংস।
পন্ত আউট হলেও রানের গতি কমতে দেয়নি দুবে ও পান্ডিয়ার জুটি। দুজন মিলে করেন ৩৪ বলে ৫৩ রান। ইনিংসের ১৮তম ওভারে রিশাদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে দুবে করেন ২৪ বলে ৩৪ রান। পান্ডিয়া টিকে থাকেন শেষ পর্যন্ত। ২৭ বলে ৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি, ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম ও রিশাদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২০ ওভারে ১৯৬/৫ (পান্ডিয়া ৫০*, কোহলি ৩৭, পন্ত ৩৬, দুবে ৩৪; তানজিম ২/৩২, রিশাদ ২/৪৩)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভার ১৪৬/৮ (নাজমুল ৪০, তানজিদ ২৯, রিশাদ ২৪ ; কুলদীপ ৩/১৯, বুমরা ২/১৩, অর্শদীপ ২/৩০)।
ফল: ভারত ৫০ রানে জয়ী।
ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ: হার্দিক পান্ডিয়া।