সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর পানিবন্দী হয়ে পড়েছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি সিলেট: সিলেটের তিনটি উপজেলায় হাসপাতাল চত্বরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী, চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত। তিনি আজ বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি ছিল। এখন হাসপাতালের ভেতর থেকে পানি নেমে গেলেও চত্বরে রয়ে গেছে। অন্যদিকে ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরেও গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ে। এতে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা ভোগান্তিতে পড়েন। এদিন গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চত্বরও তলিয়ে যায়। এ ছাড়া আজ সকালে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরেও পানি ঢুকে পড়েছে। ভারী বৃষ্টি ও ঢল অব্যাহত থাকলেও এমন পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এদিকে বন্যাকবলিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সিলেট জেলাজুড়ে ১২৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এসব দলে চিকিৎসক ছাড়াও নার্সসহ স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অনেকেই আছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর মধ্যে বিয়ানীবাজারে ১৬টি, কানাইঘাটে ১২, গোলাপগঞ্জে ১২, জকিগঞ্জে ১০, গোয়াইনঘাটে ১০, কোম্পানীগঞ্জে ১০, বিশ্বনাথে ৯, সিলেট সদরে ৯, দক্ষিণ সুরমায় ৯, ওসমানীনগরে ৯, বালাগঞ্জে ৬, ফেঞ্চুগঞ্জে ৬ ও জৈন্তাপুরে ৬টি মেডিকেল টিম গঠিত হয়েছে। এ ছাড়া জেলা পর্যায়ে আরও দুটি মেডিকেল টিম করা হয়েছে।
পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ পানিবন্দী। পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন মানুষজন। বুধবার সকালে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সিভিল সার্জন কার্যালয় আরও জানায়, হাসপাতালের ভেতরে পানি উঠে পড়ায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভ্যাকসিনগুলো সরিয়ে জেলায় নিয়ে আসা হয়েছে।
ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বলেন, প্লাবিত এলাকার সবখানেই স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে মেডিকেল টিমগুলো কাজ করছে। মেডিকেল টিমগুলো বন্যার্তদের মধ্যে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণের পাশাপাশি প্রসূতিদের সেবা নিশ্চিত করা, পানিবাহিত রোগসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে।
এর আগে গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সর্বশেষ গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিতে ফের জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।