পোষ্যদের প্রয়োজন চিকিৎসা এবং আন্তরিক সেবা। মডেল: অংকিতা বিশ্বাস | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সজীব মিয়া: শখ থেকেই অনেকে পোষেন প্রাণী। এ প্রাণীটি একসময় হয়ে ওঠে সব সময়ের সঙ্গী। তাই প্রাণীর রোগশোকের বিষয়টিও বুঝতে হবে আপনাকেই। সেই সঙ্গে নিতে হবে তার পরিপূর্ণ যত্ন।
শিক্ষার্থী নাদিয়া আহমেদ জানালেন তাঁর পোষা প্রাণী রোদের যত্নআত্তি সম্পর্কে, ‘পোষা প্রাণীটি আমাদের পরিবারেরই একজন। তাই ওর পরিচর্যা ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সবারই জানা উচিত। আমি রোদকে সপ্তাহে দুবার গোসল করাই, বেশি অসুস্থ না হলে বছরে একবার চিকিৎসকের কাছে নিই। কুকুর বলতে সবাই ভাবে মাংস খাওয়াতে হয়, আসলে খাবার বিষয়টি নির্ভর করে অভ্যাসের ওপর। আমাদের রোদ যেমন আপেল, কমলা, কলা, গাজর, টমেটোসহ সব ধরনের ফল ও সবজি খায়। যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর তা এসব প্রাণীর জন্যও ক্ষতির।’
আদরের পোষ্যকে সুস্থ রাখতে চাই বাড়তি যত্ন ও সতর্কতা। মডেল: অংকিতা বিশ্বাস | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ডা. সাগীর’স পেট ক্লিনিকের প্রধান ভেটেরিনারি চিকিৎসক সাগীর উদ্দিন আহমেদের কথাতেও এমন প্রতিধ্বনি শোনা গেল, ‘প্রাণী পোষার ব্যাপারটা নির্ভর করে বাড়ির পরিবেশের ওপর। পরিবেশভেদে যত্নটাও ভিন্ন হবে। খাবারের মান ও পরিমাণের দিকেও লক্ষ রাখতে হবে। খাবারের জন্য নির্দিষ্ট বাটি রাখতে হবে। শোয়ার জায়গাটা সব সময় পরিষ্কার রাখা উচিত আর শরীরের লোম যেন যেখানে-সেখানে না থাকে। আসল কথা হলো, প্রাণীটি বাড়িতে আনার পর থেকেই তাকে একটু একটু করে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। তাহলে বাড়ির পরিবেশের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যাবে। তবে দেশি জাতের প্রাণী পোষার ক্ষেত্রে নানা সুবিধা রয়েছে।’
যত্নের সঙ্গে প্রিয় প্রাণীর সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন প্রসাধনীসহ নানা নকশার পোশাক। বাজারে রয়েছে এমন নানা উপকরণ। এর মধ্যে রয়েছে লোমশ প্রাণীর জন্য মেডিকেটেড শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে মাউথ ফ্রেশনার, নানা ব্র্যান্ডের সুগন্ধি। এ ছাড়া বেল্ট, নানা রং-নকশার খাবার বাটিও বাজার থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
ভেটেরিনারি চিকিৎসক সাগীর উদ্দিন আহমেদ নতুন প্রাণী কেনার সময় কী করতে হবে এবং বাসার প্রিয় প্রাণীর পরিচর্যার বিষয়ে দিয়েছেন নানা টিপস।
নতুন প্রাণী নেওয়ার ক্ষেত্রে
* পোষা প্রাণী কেনার সময় প্রাণীটি সুস্থ কি না, তা দেখে নিন।
* জাত সম্পর্কে নিশ্চিত হোন, বিশেষ করে কুকুর কেনার সময় বিষয়টি জরুরি।
* প্রাণীটির জীবনযাপন সম্পর্কে জানুন।
* কেনার সঙ্গে সঙ্গেই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* টিকা দেওয়ার পর চিকিৎসকেরাই বলে দেবেন পরবর্তী সময়ে কী করতে হবে।
* পছন্দের প্রাণীর থাকার জায়গায় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
* সুষম খাবার দিতে হবে।
* বাজারের কেনা খাবারের চেয়ে বাড়ির তৈরি খাবারে অভ্যস্ত করতে পারলে ভালো।
* নিয়মিত গোসল করাতে হবে। সপ্তাহে কতবার গোসল করানো হবে, তা নির্ভর করে তার নোংরা হওয়ার ওপর।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে গোসলে শ্যাম্পু বা সাবান ব্যবহার করুন।
* নিয়মিত নখ কেটে দিন।
* লোমের ধরন বুঝে চিরুনি ব্যবহার করুন।
* রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
* বয়স, জাত ও ঋতুভিত্তিক টিকা নিন।
* আপনার পোষা প্রাণীর জন্য বছরে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।