প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান পবিত্র কাবায় হজ পালনে সমবেত হন। গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের মক্কায় | ছবি: এপি
পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: পবিত্র হজের অংশ হিসেবে হাজিরা মিনায় এসেছেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে হজের নিয়ত করে তাঁরা মক্কা থেকে রওনা হন মিনার উদ্দেশে। তাঁদের মুখে ছিল তালবিয়া ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক।’
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পবিত্র হজ পালন করতে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা গতকাল মিনায় এসে পৌঁছেছেন। মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনা।
মিনায় যেদিকে চোখ যায় তাঁবু আর তাঁবু। চৌচালা ঘরের মতো তাঁবুতে থাকবেন হাজিরা। পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক তাঁবু। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত তাঁবুতে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ফোম, বালিশ, কম্বল বরাদ্দ। ফোমের নিচে বালু। খাবার বাইরে থেকে রান্না করে নিয়ে আসতে হয়। কিছুদূর পরপর আছে খাবারের দোকান। মিনায় রাতযাপন জীবনের এক পরম পাওয়া। হাজিরা নিজ নিজ তাঁবুতেই নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করছেন। জামাত হলেও যাঁর যাঁর ফোমের বিছানায় জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজে দাঁড়াতে হয়।
হাজিরা মিনার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখছেন। মিনার কাছেই সৌদি বাদশাহর বাড়ি, রাজকীয় অতিথি ভবন, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখছেন তাঁরা। ঢাকার বনানী থেকে হজ করতে এসেছেন রুবাইয়াত জামান। দেখছিলেন মসজিদে খায়েফ।
আজ ৮ জিলহজ মিনায় থাকবেন হাজিরা। ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে তাঁরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। এরপর আরাফাত থেকে মুজদালিফায় গিয়ে রাতযাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন। ১০ জিলহজ হাজিরা মিনায় বড় শয়তানকে পাথর মারবেন, কোরবানি দেবেন, মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ ও সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করবেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন তাঁরা। প্রত্যেক শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়।
জামারায় প্রতি ঘণ্টায় তিন লাখ হাজি পাথর নিক্ষেপ করতে পারেন। জামারা কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য জামারার ভেতরে ক্লোজড সার্কিট টিভি (সিসিটিভি) ক্যামেরা আছে। জরুরি প্রয়োজনে হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য রয়েছে হেলিপ্যাড।
মিনার মানচিত্র সঙ্গে থাকলে হারানোর ভয় নেই। মিনার কিছু অবস্থান চিনে নিজের মতো করে আয়ত্তে আনলে এখানে চলাচল করা সহজ। মিনার বড় রাস্তাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নাম ও নম্বর রয়েছে। রাস্তার নাম ও নম্বর জানা থাকলে মিনায় চলাচল করতে কোনো অসুবিধা হয় না।