পাবনায় ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বুধবার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: তিন বোন, ভাগনি ও ভগ্নিপতিকে নিয়ে বিয়ের জন্য কনে দেখতে যাচ্ছিলেন প্রদীপ কুমার হালদার (২৫)। সবাই ছিলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কনের বাড়িতে পৌঁছাতে পারেননি তাঁরা। পথে একটি দ্রুতগামী ট্রাক তাঁদের অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে প্রাণ হারিয়েছেন প্রদীপ ও তাঁর ছোট বোন। গুরুতর আহত হয়েছেন দুই শিশুসহ একই পরিবারের আরও পাঁচজন।

বুধবার দুপুরে পাবনা সদরের গয়েশপুর ইউনিয়নের ধোপাদহ এলাকায় পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আহত ব্যক্তিদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন চিকিৎসক।

নিহত প্রদীপ কুমার হালদার বেড়া উপজেলার ব্রি-শালিখা গ্রামের রাজকুমার হালদারের ছেলে। নিহত তাঁর ছোট বোনের নাম সম্পা রানী (২০)। আহত ব্যক্তিরা হলেন প্রদীপের বড় দুই বোন প্রভাতী রানী (৩৫) ও শিল্পী রানী (৩০); শিল্পীর স্বামী স্বপন কুমার (৪০) ও মেয়ে অনুরাধা (৯) এবং প্রভাতীর মেয়ে তনুশ্রী (৫)।

পাবনায় ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসায় স্বজনদের ছোটাছুটি। বুধবার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রত্যক্ষদর্শী ও হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রদীপ কুমারের জন্য কনে দেখতে পরিবারের সদস্যরা মিলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নিজ গ্রাম থেকে পাবনা জেলা শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে পাবনা সদরের ধোপাদহ এলাকায় একটি দ্রুতগামী ট্রাক অটোরিকশাটিকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মহাসড়কেই অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রদীপ কুমারের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অন্যদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা সম্পা রানীকে মৃত ঘোষণা করেন।

বেলা দুইটার দিকে জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আহত পাঁচজনকে হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। সবার শরীর রক্তমাখা। আহাজারি করছেন পরিবারের লোকজন। এর মধ্যে প্রদীপের বড় দুই বোন ও এক ভাগনির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।

প্রদীপের মামা পরিমল হালদার জানান, তাঁর ভাগনে প্রদীপ পড়ালেখা শেষ করে কিছুদিন হলো একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিতে ঢুকেছেন। তাঁর বিয়ের কথা চলছিল। বিয়ের জন্য কনে দেখতেই তাঁরা সবাই জেলা শহরে যাচ্ছিলেন। পরে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি এসেছেন।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রওশন আলী বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। খবর পেয়ে নিহত দুই ভাই–বোনের লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদের চিকিৎসায় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। ট্রাকটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে।