বোট ক্লাবের সভাপতির পদ ছাড়লেন বেনজীর

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ | গ্রাফিক্স পদ্মা ট্রিবিউন 

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ঢাকার অদূরে সাভারের বোট ক্লাবের সভাপতির পদ ছেড়েছেন। ১৩ জুন ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজীজের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তিনি এ পদ ছাড়েন।

বোট ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নাসির ইউ মাহমুদ বলেন, বোট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে থাকা বেনজীর আহমেদ ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজীজের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, জরুরি কাজে পরিবারের সঙ্গে তিনি দেশের বাইরে আছেন। যে কারণে তিনি ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। নাসির জানান, বেনজীর আহমেদের পদত্যাগের পর রুবেল আজীজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ও তাঁর পরিবারের সম্পদ অনুসন্ধান করছিল। তার মধ্যেই গত ৪ মে তিনি সপরিবার দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন বেনজীর। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, বেনজীর পরিবারের সম্পদের অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে দুদক। এখন পর্যন্ত যেসব সম্পদ পাওয়া গেছে, তা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সর্বশেষ বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ঢাকায় আরও আটটি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় দুদক। এর মধ্যে ছয়টি ফ্ল্যাট ঢাকার আদাবরের একটি ভবনে। দুটি বাড্ডায়। রূপায়ন লিমিটেড স্কয়ার নামের ১৪ তলা ভবনে অবস্থিত বাড্ডার ফ্ল্যাট দুটি বাণিজ্যিক বা অফিস স্পেস।

বেনজীর পরিবারের নামে এ নিয়ে ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেছে। এর আগে পাওয়া গিয়েছিল গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সম্প্রতি বেনজীর পরিবারের আটটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন। পাশাপাশি আদালত বেনজীর পরিবারের প্রায় ৭৬ বিঘা (২৫ একর) জমি জব্দ এবং বেসরকারি সিটিজেন টেলিভিশন ও টাইগার ক্রাফট অ্যাপারেলস লিমিটেডের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন।

আদালত এর আগে দুই দফায় বেনজীর ও তাঁর পরিবারের নামে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কক্সবাজার ও ঢাকার সাভারে থাকা ৬২১ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার এবং গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন। তখন ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ৩টি বিও হিসাবও (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে বেনজীর পরিবারের নামে জমি পাওয়া গেছে ৬৯৭ বিঘা।