ধুনট আওয়ামী লীগে বিরোধ, আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন

দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুন্নবী তারিকের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের শোভাযাত্রা। রোববার বেলা ১২টায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল আবার প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মামলা হামলার পর আজ রোববার উপজেলা আওয়ামী লীগ আলাদা কর্মসূচির মাধ্যমে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করেছে। ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা ১১টায় ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টি আই এম নুরুন্নবী তারিকের নেতৃত্বে ধুনট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ শোভাযাত্রা বের করে। শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাজাজ শোরুম চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টি আই এম নুরুন্নবী তারিক। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাই, সদস্য মোজাফ্ফর রহমান, আওয়ামী লীগের নেতা কুদরত-ই-খুদাসহ আওয়ামী লীগের যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা বক্তব্য দেন।

অপর দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আসিফ ইকবালের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী আরেকটি অংশ সকাল ৯টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিকেল চারটায় দলীয় কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে ধুনট প্লাজায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবালের নেতৃত্বে দলের আরেকটি অংশ বিকেল সাড়ে তিনটায় পৃথক শোভাযাত্রা বের করে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম সোবহান, রেজাউল করিম, এম এ তারেকসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের আরেকটি অংশের নেতারা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, সদ্য শেষ হওয়া ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে টি আই এম নুরুন্নবী, আসিফ ইকবাল ও আবদুল হাই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রচারণা শুরুর পর থেকেই তিনজনের কর্মী–সমর্থকেরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনে আসিফ ইকবাল বিজয়ী হন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন করে অপর দুই প্রার্থী নুরুন্নবী ও আবদুল হাই বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট কেনার, কালোটাকা ছড়ানোসহ নানা অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিলের দাবি জানান। তবে আসিফ ইকবাল এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেন। এর পর থেকেই দ্বিধাবিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগ। এর জেরে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয় আলাদাভাবে।

আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনের বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসিফ ইকবাল বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলে ঐক্য নষ্ট করেছেন সভাপতি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন নিয়ে তিনি দলীয় কোনো সভা ডাকতে বলেননি। দলীয় কর্মসূচিতে ডাকেননি। বাধ্য হয়ে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।