কমলাপুর রেল স্টেশনে বেড়েছে যাত্রীদের ভিড় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন আজ শনিবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে লোকাল (কমিউটার) ট্রেনের টিকিট বিক্রির কাউন্টারে প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। কাউন্টারের সামনে শত শত যাত্রী কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের টিকিটের জন্য সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন।

অন্যদিকে কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর ট্রেনগুলোয় তুলনামূলক ভিড় কম ছিল। ফলে অনেকটাই স্বস্তি নিয়ে যাত্রা করছেন যাত্রীরা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার কমলাপুর থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮টি কমিউটার ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনের টিকিট অনলাইনে অগ্রিম বিক্রি হয় না। যাত্রা শুরুর আগে স্টেশনে থাকা টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হয়।

ঈদের দুই দিন আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রির নির্ধারিত কাউন্টারের সামনে শত শত মানুষের ভিড় দেখা যায়। একাধিক সারিতে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মানুষের সারি কাউন্টারের সামনে থেকে পেছনের দিকে কমলাপুর স্টেশনের পার্কিং পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে যায়।

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে লোকাল (কমিউটার) ট্রেনের টিকিট বিক্রির কাউন্টারে প্রচুর ভিড় দেখা গেছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

রাজশাহী কমিউটার ট্রেনের টিকিট পেতে সারিতে দাঁড়ান আবদুল লতিফ। তিনি বলেন, ‘ট্রেন সাড়ে ১২টায়। কিন্তু স্টেশনে পৌঁছে লাইনে দাঁড়িয়েছি সকাল সাড়ে ৯টায়। এখন সাড়ে ১০টার বেশি বাজে কিন্তু কাউন্টারের সামনে পর্যন্ত পৌঁছাতে এখনো পারিনি৷ তারা কিছুক্ষণ টিকিট দেয়, আবার বন্ধ রাখে।’

সিরাজগঞ্জ যেতে ওই ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ান বাবুল মিয়া। বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাঁর সামনে আর প্রায় ৩০ জন দাঁড়ানো ছিল। বাবুল বলেন, ‘আধঘণ্টার বেশি সময় লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি হচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কি আর করা, অনলাইনে টিকিট কাটতে পারিনি। বাড়ি তো যেতেই হবে।’

দুপুর ১২টার দিকে লোকাল ট্রেনের কাউন্টারের সামনে আরও বেশি ভিড় দেখা যায়। ওই সময় সারিতে দাঁড়ানো যাত্রীরা নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। পরে আনসার সদস্যরা বাঁশি বাজিয়ে পরিস্থিতি সামলান।

তিতাস কমিউটার ট্রেনের যাত্রী আসাদুল হক বলেন, ‘ওদের ট্রেনে কোনো লিমিট নাই। যতক্ষণ পারে টিকিট বিক্রি করে। ট্রেনে আর জায়গা হবে কি না, সেটাও ভাবে না। পরে ট্রেনে উঠতে পারা না-পারা যাত্রীর ব্যাপার।’

অন্যদিকে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রা শুরুর ২ ঘণ্টা আগে ট্রেনের মোট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং (দাঁড়িয়ে যাত্রা) হিসেবে বিক্রয় করা হয়। ফলে ওই টিকিটের জন্যও আন্তনগর ট্রেনের কাউন্টারের সামনে মানুষের ভিড় রয়েছে।

আন্তনগর কাউন্টারের সামনে টিকিটের জন্য সারিতে দাঁড়ানো যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট পাইনি৷ আশা করছি অন্তত ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট পাওয়া যাবে। এতে কষ্ট হলেও বাড়িতে সবার সঙ্গে ঈদ করতে পারব।’

কমলাপুর রেল স্টেশনে ট্রেনের বগি খুজছে একটি পরিবার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আজ সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশন থেকে ২০টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ের দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই ছেড়ে দেয়। কোনো কোনো ট্রেন ছাড়ে নির্ধারিত সময়ে ৮ থেকে ১০ মিনিট পর। ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে অনেক যাত্রীকে দৌড়ে ট্রেনে উঠতে দেখা গেছে। তবে ট্রেনের ভেতরে উপচে পড়া ভিড় ছিল না। তুলনামূলকভাবে ভিড় কম ছিল স্টেশনের ভেতরে ও প্ল্যাটফর্মেও।