রাবিতে ফিশারিজ ও অ্যাকোয়াকালচার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

রাবিতে দুদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফিশারিজ ও অ্যাকোয়াকালচার বিষয়ক দুই দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদ ও বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ফোরাম যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘স্মার্ট অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড ফিশারিজ ফর সেফ ফুড প্রডাকশন’ শীর্ষক এই সম্মেলন শুরু হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা। অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ফিশারিজ অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মন্ডল। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন ভূইয়া, ফিশারিজ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর, বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. জুলফিকার আলী ও ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ বিনয় কুমার বর্মণ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন সম্মেলন কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. তরিকুল ইসলাম।

সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ প্রবাদটা আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। বাঙালির পাতে মাছ থাকবে না, তা হতে পারে না। দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করে জিআই পণ্য জাতীয় মাছ ইলিশ, ‘হোয়াইট গোল্ড’ চিংড়িসহ প্রায় কয়েকশ প্রজাতির মাছ বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ সুনামের সঙ্গে প্রচুর রেমিট্যান্স আয় করছে। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। মোট উৎপাদনের শতকরা ৮৬ ভাগই বাংলাদেশের দখলে। ‘মৎস্য ও জলজ কৃষি’ একটি আকর্ষণীয় গবেষণা খাত। এই খাতের গবেষণা ও উন্নয়নে সমবায়ভিত্তিক চাষপদ্ধতি সুফল বয়ে আনবে। এ জন্য প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ফিশারিজ বাংলাদেশের কৃষি খাতে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। সম্ভাব্যতা যাচাই ও গবেষণার মাধ্যমে উন্নততর প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণীর উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে দেশে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উদ্বৃত্ত উৎপাদন বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। ইতিমধ্যেই এই খাত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে। এই ধারাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনিলাভ কবিরাজ ও রাবি ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন ওই প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন। আজ প্রথম দিনে একটি প্লিনারি সেশন, একটি বিজনেস সেশন এবং একটি টেকনিক্যাল সেশনের আওতায় পাঁচটি প্যারালাল টেকনিক্যাল সেশন, একটি পোস্টার সেশনের আওতায় চারটি থিমেটিক পোস্টার সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আগামীকাল রোববার সম্মেলনের শেষ দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘কনফারেন্স ট্রিপ’ অনুষ্ঠিত হবে। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশ থেকে প্রায় ৪০০ ফিশারিজ ও অ্যাকোয়াকালচার বিষয়ের শিক্ষক, গবেষক ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের পেশাজীবী অংশ নিচ্ছেন।