সড়কে লাশ দেখে তরুণ বললেন, ‘এটা তো আমার মা, বাবা কই?’

সড়ক দুর্ঘটনার পর ভিড় করেন এলাকার লোকজন। বুধবার বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বন্দর এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বন্দর। গতকাল বুধবার রাত আনুমানিক পৌনে ১০টা। তখনো বাজারের চায়ের দোকানে মানুষের আনাগোনা রয়েছে। হঠাৎ মহাসড়কের সেনাফটকের এমপি চেকপোস্টসংলগ্ন স্থানে বিকট শব্দ।

সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শোরগোল, হইচই, চিৎকার। একজন চিৎকার দিয়ে উঠলেন, ‘ইশ্‌, সব শ্যাষ।’ মহাসড়কের ওপর পড়ে আছে একজন নারীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন লাশ। পাশেই ভাঙা টিফিন ক্যারিয়ারে রান্না করা মাংস ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে, পড়ে আছে জুতা ও ভ্যানিটি ব্যাগ। দুর্ঘটনার শিকার মোটরসাইকেলও পড়ে আছে এক পাশে। আরেক পাশে উল্টে গেছে পণ্যবাহী ট্রাক। সড়কে যান চলাচল বন্ধ।  

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। লাশের পরিচয় তখনো শনাক্ত হয়নি। আহত একজনকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় হাসপাতালে।
উৎসুক মানুষের ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসেন পথচারী তরুণ। খণ্ডিত লাশ দেখে শিউরে ওঠেন। দেহের ওপরের অংশ দেখেই চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘এটা তো আমার মা, বাবা কই?’

ওই তরুণের নাম তানভীর আহম্মেদ (১৮)। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মিতু বেগম (৩৮) তাঁর মা। গতকাল রাতে বগুড়ার শাজাহানপুর বন্দরে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের আরোহী মিতু বেগম নিহত হন। তিনি উপজেলার ডমনপুকুর নতুনপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল মজিদের স্ত্রী। ওই ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক আবদুল মজিদ আহত হন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলায়। দুর্ঘটনার পর আমবাহী ট্রাকের চালক পালিয়ে যান।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বাসস্ট্যান্ডের সেনানিবাস এমপি চেকপোস্টের সামনে মোটরসাইকেল চালিয়ে আবদুল মজিদ সড়ক পার হচ্ছিলেন। তখন পেছন থেকে আসা ঢাকামুখী আমবোঝাই ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় মহাসড়কে।

হাইওয়ে পুলিশের বগুড়ার শেরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সৈয়দ আবুল হাশেম আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ট্টাকচাপায় মিতু বেগম ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। আহত মোটরসাইকেলচালক আবদুল মজিদকে বগুড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।