ঘরে–বাইরে সর্বত্র পানি আর পানি। পরিবারের সদস্যের সঙ্গে ঘরে খাটের ওপর বসে আছে পানিবন্দী শিশুরা। গত বৃহস্পতিবার সিলেট নগরের মাছিমপুর এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ইতিমধ্যে ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। তারা বলেছে, এই ২০ লাখের মধ্যে ৭ লাখ ৭২ হাজারের বেশি শিশু। তাদের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন।
আজ শুক্রবার বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ।
বিবৃতিতে ইউনিসেফ বলেছে, বন্যার পানি বৃদ্ধির
সময় শিশুরাই সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। তারা ডুবে মারা যাওয়া, অপুষ্টি ও
মারাত্মক পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া, বাস্তুচ্যুতির আতঙ্ক এবং জনাকীর্ণ
আশ্রয়কেন্দ্রে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
সরকার এবং মাঠপর্যায়ের অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় ও অংশীদারত্বে ৫ দিনের মধ্যে প্রায় ১ লাখ বন্যাকবলিত মানুষের কাছে নিরাপদ পানি বিতরণ করেছে ইউনিসেফ বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই সময়ে ৩ হাজারের বেশি ১০ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পানির বোতল বিতরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে গেলে তা মোকাবিলায় বিভিন্ন গুদাম থেকে জরুরিভিত্তিতে অতিরিক্ত জরুরি সরঞ্জাম আনা হচ্ছে।
১৩ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে স্কুল বন্ধ ছিল উল্লেখ করে ইউনিসেফ বলেছে, সিলেট বিভাগে ৮১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তা ছাড়া ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রায় ১৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নদীগুলোর পানি বিপজ্জনক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে এবং আগামী ২৪ থেকে ৪৮
ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে
ইউনিসেফ। তারা বলেছে, এই কঠিন সময়ে সম্ভাব্য সহিংসতা নিরসনে এবং ট্রমা বা
আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে শিশুদের সহযোগিতা করতে শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মীরা পরামর্শ
ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন।