ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ রাস্তা থেকে সরানো হচ্ছে। আজ বুধবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকবাউশা গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকবাউশা গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঝড়ে গাছচাপায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন পাঁচজন। এ ঘটনায় চকবাউশা গ্রামের মানুষ শোকাহত। ফলে আজ বুধবার সকালে শুরু হওয়া বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ওই গ্রামে ভোটের উৎসবের বদলে এখন মাতম চলছে।

মারা যাওয়া দুজন হলেন সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন এবং গ্রামের পাওয়ারটিলার-চালক জাকিরুল ইসলাম। আজ সকাল ৯টায় জাকিরুল ইসলামের জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়। পরে গ্রামের লুৎফর রহমানের আমবাগানে সকাল সোয়া ১০টায় জালাল উদ্দিনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ ভোটকেন্দ্রমুখী না হয়ে জানাজা ও দাফন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। স্বজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারিতে এলাকায় ভোটের উৎসব যেন বিষাদে পরিণত হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গ্রামের কৃষক মো. সেন্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত অন্য ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। আজ সকালে আমবাগানে গিয়ে দেখা যায়, জানাজায় গ্রামের বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছেন। গ্রামের নারীরা রাস্তার ওপর জড়ো হয়েছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁরা শুধু আহাজারি করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত আটটার দিকে চকবাউশা গ্রামে ঝড় শুরু হয়। আধা ঘণ্টার ঝড়ে চকবাউশা গ্রামের রাজার মোড়ের পাকুড়গাছ উপড়ে কয়েকজন চাপা পড়েন। খবর পেয়ে বাঘা উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঝড়ে গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়া জালাল উদ্দিনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বুধবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকবাউশা গ্রামে আমবাগানে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় চকবাউশা গ্রামের গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসী গাছের ডাল কেটে রাস্তা পরিষ্কারের চেষ্টা করছেন। গ্রামের বাসিন্দা লালন উদ্দিন বলেন, সারা রাত গ্রামের মানুষের ঘুম নেই। রাত থেকেই গাছ সরানোর চেষ্টা চলছে। আজ সকালে ভোট দিতে যাওয়া বাদ দিয়ে গ্রামের মানুষ লাশের দাফন-কাফন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এদিকে আজ সকাল আটটায় গ্রামের পাঁচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, চকবাউশা গ্রামের ভোটারদের ভোটকক্ষে তেমন ভোটার দেখা যায়নি। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা জানান, দুজন মানুষকে দাফন শেষে গ্রামের লোকজন হয়তো ভোট দিতে আসবেন। আশা করছেন, দুপুর ১২টার পর তাঁরা ভোটকেন্দ্রে আসতে শুরু করবেন।

বাগা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় লোকজন প্রথমে ধরে নিয়েছিলেন, গাছের চাপায় তিনজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় দুজন মারা গেছেন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।