কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের কাজ করছেন ঢাকা উত্তর সিটি সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগের দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী ছয় ঘণ্টাতেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সব এলাকা থেকে কোরবানির সব বর্জ্য অপসারণ করার দাবি করেছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

ঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাত ৮টার মধ্যেই ৫৪টি ওয়ার্ডের সব এলাকার শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এজন্য গাড়িগুলোর ট্রিপ দিতে হয়েছে ২১০১টি। অপসারণ করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ টন বর্জ্য।

এদিকে ঈদের দিন রাত ১০টার মধ্যেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭১টির সব বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ সময়ে ১০ হাজার ৭২১.৪৮ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়।

এ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, বাকি তিনটি ওয়ার্ড (৩, ৬০ ও ৬২ নম্বর ওয়ার্ড) হতে গড়ে ৮৫ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

সোমবার সকালে রাজধানীতে ঈদের নামাজ শেষে পশু কোরবানির তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। বেশির ভাগ জায়গায় বাড়ির সামনে ফাঁকা রাস্তা বা ফুটপাতকেই বেছে নেওয়া হয় কোরবানির জন্য। মাংস কাটাকাটি চলে বাড়ির বেইজমেন্টে। এরপর দুপুর ২টা থেকে বর্জ্য অপসারণে নামেন দুই সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।

ঢাকায় কোরবানি করা পশু এবং কোরবানির হাট মিলিয়ে অন্তত ৩৯ হাজার টন বর্জ্য হবে বলে ধরে নিয়েছে দুই সিটি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ১১৫টি ডাম্প ট্রাক, ১৪০টি পিক-আপ, ১২৯টি কমপেক্টরসহ ৫২০টি বিশেষায়িত যান মাঠে আছে।

বর্জ্য অপসারণে ৪ হাজার ৯৯৭ জন নিজস্ব ও সাড়ে চার হাজার বেসরকারি কর্মী কাজ করছে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছেন ৬০ জন করে। বর্জ্য অপসারণে ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ১৫০টি মিনি ট্রাক, ৪৬টি কম্পেক্টর এবং ৪৭টি পে লোডারসহ ৫৬০টি যান নিয়োজিত করেছে দক্ষিণ সিটি।

ঢাকা দক্ষিণ ২৪ ঘণ্টায় বর্জ্য সাফসুতরো করে নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে চেয়েছে। আর দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এ কার্যক্রম রাত ৮টায় শেষ করার যে ঘোষণা দিয়েছিল উত্তর সিটি তা সফলভাবে শেষের দাবি করা হয়েছে।

মিরপুরের গোলারটেক মাঠে ঈদের জামাত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মেয়র আতিক এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে ডিএনসিসি।

মেয়র বলেন, “সবার সহযোগিতায় পূর্ব ঘোষিত ছয় ঘণ্টায় ঢাকা উত্তর সিটির কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতায় এটি করতে পেরেছি।”

আগামী দিনেও ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণ ও সিটি করপোরেশনকে একসঙ্গে কাজ করার কথা তুলে ধরেন তিনি।

যারা ঈদের দিন কোরবানি দিতে পারেননি তাদেরকে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে কোরবানি সম্পন্ন করার আহবান জানান মেয়র।

ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিক দুপুর ২টায় মিরপুরে আনুষ্ঠানিক অপসারণ কাজ উদ্বোধন শেষে মিরপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সরাসরি তদারকি করেন।

মঙ্গলবারও তৎপরতা থাকবে
সন্ধ্যার পর এমনকি রাতেও অনেক স্থানে কোরবানি দেওয়া হচ্ছে।

উত্তর সিটি থেকে বলা হয়েছে, হটলাইন ১৬১০৬ এ ফোন করে কোরবানির নতুন তথ্য জানালে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে।

ডিএনসিসি মেয়র বর্জ্য বিভাগকে এবং তদারকির জন্য গঠিত ১০টি গ্রুপকে মঙ্গলবারও কোরবানির বর্জ্য দ্রুত সময়ে পরিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছেন।