বগুড়া সদরের মাটিডালি এলাকায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখা কার্যালয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি বগুড়া: বগুড়ায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখার সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা চুরির মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চুরির টাকায় কেনা একটি মোটরসাইকেল, নগদ ১০ লাখ ৮৬ হাজার টাকাসহ চারজনকে সোমবার রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বগুড়ার সদর উপজেলার বড় টেংরা গ্রামের মো. জাহিদুল ইসলাম (২৯), সোনাতলা উপজেলার দক্ষিণ আটকড়িয়ার মো. পাভেল (২৫), আদমদীঘি উপজেলার তালশন গ্রামের বিপ্লব সরকার মিথুন (২৮) এবং গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়া গ্রামের বিমল রাজভর (৩০)। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত শুনানির জন্য ২৭ জুন দিন ধার্য করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে প্রথমে মো. পাভেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ব্যাংকের সিন্দুক ভেঙে টাকা চুরির মামলায় মূল হোতা জাহিদুল ইসলাম।
আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আইএফআইসি ব্যাংকের মাটিডালি উপশাখা কার্যালয়ের সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আগে আসামিরা রাত সোয়া ১২টার দিকে দ্বিতীয় বাইপাস সড়কের করতোয়া নদীর মাটিডালি সেতুর কাছে একত্র হন। ব্যাংক ভবনের নিচে গিয়ে একজন আশপাশের মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন। পরে দলনেতা জাহিদুল ইসলামসহ অন্যরা ভবনের দোতলায় ওঠেন। মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে দুজন মাস্ক পরে বাইরে অপেক্ষা করেন। অন্যরা ভবনের ভেতরে ঢুকে ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা চুরি করেন। পরে চুরির টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়ে আত্মগোপনে যান। ভাগের টাকায় দলনেতা জাহিদুল ইসলাম লাল রঙের একটি মোটরসাইকেল কেনেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে ব্যাংকের সিন্দুক থেকে সরানো ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে একটি চুরি ও একটি মাদকের মামলা রয়েছে।
টাকা চুরি করবেন, এমন চিন্তায় এক মাস আগে থেকে দলনেতা জাহিদুল নানা ছুতোয় ব্যাংকে আসতেন বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি জানান, উপশাখায় নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল নিশ্চিত হওয়ার পর সিন্দুক ভেঙে টাকা চুরির পরিকল্পনা করেন। গ্রেপ্তারের পর পাভেলের কাছ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৭৭০ টাকা, বিমলের কাছ থেকে ২ লাখ ৯৩ হাজার ২২০ টাকা, মিথুনের কাছ থেকে ১ লাখ ৯১ হাজার ২৫০ টাকা এবং জাহিদুলের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ছাড়াও ব্যাংক থেকে সরানো টাকায় কেনা মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
১২ জুন রাতের কোনো এক সময়ে বগুড়া শহরতলির মাটিডালি এলাকার একটি ভবনের দোতলায় অবস্থিত আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখা কার্যালয়ে সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। পরদিন ব্যাংকের বগুড়া শাখার গ্রাহকসেবা বিভাগের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন।