রাজশাহীতে পিটিয়ে বড় ভাইকে হত্যার পর ছোট ভাইকেও হুমকি

রাজশাহীতে বাগমারার ইলিয়াস হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পিটিয়ে বড় ভাইকে হত্যা করার অভিযোগে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন জামিনে থাকা ওই মামলার আসামিরা ছোট ভাইকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে।

সেখানে কান্নাজড়িত কণ্ঠে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা। আসামিদের হুমকির কারণে বর্তমানে তাঁরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান।

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ১৪ মে বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের মাঝিগ্রামের সাজেদুর রহমানের ছেলে ইলিয়াস আহমেদকে (৩০) পিটিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। তাঁকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে ছোট ভাই ইমরান আলীকেও (২৮) পিটিয়ে আহত করা হয়। ঘটনার ১০ দিন পর ২৪ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইলিয়াস মারা যান।

দুই ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় ইমরান আলী বাদী হয়ে আদালতে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন আইনুল হক, মহাসীন আলী. মো. সাদিকুল, মর্জিনা বিবি, সুফিয়া বিবি, আয়ুব আলী, মো. শাকিল, মো. আলম, আব্দুর রশিদ, রওশন আরা, মুনসুর রহমান, আব্দুস সোবহান ও মো. গোলাম। মাঝিগ্রাম ও পাশের একডালা গ্রামে আসামিদের বাড়ি।

ইলিয়াস আহমেদ মারা যাওয়ার আগেই ১২ আসামি আদালত থেকে জামিন নেন। ইলিয়াস মারা যাওয়ার পর হামলার মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে পুলিশ আদালতে আবেদন করেছে। মামলার আসামিরা জামিনেই আছেন। এখন তাঁরা মামলার বাদীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরের একটি রেস্তোরাঁয় নিহত ইলিয়াসের পরিবারের পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত ইলিয়াসের ছোট ভাই ও মামলার বাদী ইমরান আলী, মা ডালিমা বেগম ও চাচাতো ভাই সোহেল রানা। সংবাদ সম্মেলনে রঞ্জিতা খাতুন বলেন, ‘মামলা করার পর পুলিশ এ পর্যন্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’ রঞ্জিতা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। পাশাপাশি স্বামী হত্যার বিচার চান।

নিহত ইলিয়াসের ভাই ইমরান আলী বলেন আসামিরা তাঁকে হুমকি দিয়ে বলছেন, ‘এক ভাইকে মারার কারণে এমনিতেও ফাঁসি হবে, আরেক ভাইকে মেরেই তাঁরা ফাঁসির কাষ্ঠে যাবেন।’ ইমরান আরও বলেন, ‘আমি মামলার বাদী। আমাকে মেরে ফেললে মামলা দুর্বল হয়ে পড়বে। কেউ মামলা লড়তে পারবে না। তাই তারা আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আসামিরা কারাগারে থাকলে এত ভয়ে থাকতাম না।’

মুঠোফোনে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘আসামিরা যদি সত্যিই হুমকি দিয়ে থাকে, তাহলে তাদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আছে। তারা বিষয়টি জানালে খতিয়ে দেখা হবে।’