আটক | প্রতীকী ছবি |
প্রতিনিধি বাঘা: রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় চারটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ৫ জুন নির্বাচন হয়। এতে বাঘায় বিজয়ী হন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু (মোটরসাইকেল)। তাঁর কর্মী–সমর্থকেরা পরাজিত প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টুর (আনারস) প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের ওপর একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাউসা ইউনিয়নের বাউসা মাঝপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম শিমুল, সেন্টু আলী, বাবলু হোসেন নামের চারজন পৃথক চারটি মামলা করেছেন। পুলিশ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাঘা-আড়ানী সড়কের আড়ানী ইউনিয়নে পাঁচপাড়া গ্রামের রাজার মোড়ের উত্তরে সাঁকোর পাশে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, কে বা কারা এ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটিয়েছে সেটা জানা নেই।
উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামের বাড়িতে ৫ মে রাতে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলুর সমর্থিত লোকজন ইট–পাটকেল নিক্ষেপ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় ৬ মে পুলিশ বাউসা মাঝপাড়া গ্রামের রমজান আলী (৫২) ও বাউসা হেদাতিপাড়া গ্রামের নূরল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন।
মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থিত লোকজন ৬ জুন বাউসা ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের রোকনুজ্জামান রিন্টুর সমর্থিত ধন্দহ গ্রামে বাবলু হোসেনের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় বাবলু বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
ওই দিন একই গ্রামের ভ্যানচালক সেন্টু আলীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় সেন্টু বাদী হয়ে মামলা করেন।
এদিকে ৬ জুন মাঝপাড়া গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধার হায়দার আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এতে তাঁর বাড়ির আসবাব, টিভি, ফ্রিজ জানালা, দরজা, আলমারি ভাঙচুর করা হয়েছে। রাকিবুল ইসলাম শিমুলের নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার লিখিত অভিযোগে (এজাহারে) উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে রোকনুজ্জামান রিন্টু বলেন, ‘নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকে লায়েব উদ্দিন লাভলু সমর্থকেরা বিভিন্নভাবে বাধা দিয়ে আসছেন। ভোটের দিন তার কর্মী-সমর্থকেরা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ৫ জুন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু বিজয়ী হওয়ার পর থেকে একের পর এক তার কর্মী-সমর্থকেরা আমার কর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন করা করে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী রোকনুজ্জামান রিন্টু পরাজিত হয়ে নিজেরাই নানা কৌশলে বিভিন্নভাবে অপকর্ম করে আমার মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থিত লোকজনের ওপর একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে গ্রেপ্তার আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাড়ি ছাড়া করে রেখেছেন। ইতিমধ্যে এসব অভিযোগে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, মামলায় এখন পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।