রান্না করা হরিণের মাংস জব্দ করে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে আনা হয়। পরে তা মাটিতে পুঁতে ফেলা হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি কয়রা: সুন্দরবনের গহিনে জেলে নৌকার চুলায় চলছিল শিকার করা হরিণের মাংস রান্না। খানিক বাদেই শুরু হয় খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। তবে খাবার মুখে তোলার আগেই আশপাশ থেকে ভেসে আসে বনরক্ষীদের বহনকারী ট্রলারের শব্দ। তা শুনেই খাবার ফেলে পালিয়ে যান অবৈধ হরিণশিকারিরা। আজ সোমবার ভোরে সুন্দরবনের পাটকোস্টা টহল ফাঁড়ির আওতাধীন গোনসা খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পাটকোস্টা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, ‘আজ ভোরের আলো ফোটার আগে গোনসা খাল এলাকায় তিনটি নৌকা পাশাপাশি দেখে টহল দল নিয়ে এগিয়ে যাই। আমরা আবছা আলোয় দেখতে পাচ্ছিলাম কয়েকজন নৌকার মাথার দিকে ভাত খেতে বসছে। এ সময় আমাদের দেখে অন্তত ছয় ব্যক্তি ভাতের প্লেট রেখেই নৌকা থেকে লাফিয়ে গহিন বনের ভেতর পালিয়ে যান। এ কারণে কাউকে আটক করতে পারিনি।’
সুন্দরবনে এখন হরহামেশাই হরিণ দেখতে পান পর্যটকেরা। সম্প্রতি সুন্দরবনের কটকা এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পরিত্যক্ত তিনটি নৌকা তল্লাশি করে চার হাঁড়িতে রান্না করা হরিণের মাংস এবং প্লেটে ভাত মাখানো মাংস পাওয়া গেছে বলে জানান শ্যামা প্রসাদ রায়। তিনি বলেন, এসব নৌকায় কাঁকড়া ধরার সরঞ্জামও ছিল। মনে হচ্ছে, পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা কাঁকড়া ধরার নামে বনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করে খাওয়ার আয়োজন করেছিলেন।
অভিযানে অংশ নেওয়া পাটকোস্টা টহল ফাঁড়ির আরেক বনরক্ষী বাবুল আক্তার বলেন, ‘আমরা ভোরের আবছা আলোয় নৌকা তিনটি দেখতে পেলেও নৌকার কাউকে চিনতে পারিনি। আমাদের দেখে মুহূর্তেই লাফিয়ে বনে নেমে গহিনে হারিয়ে যায় তারা। হাঁড়িতে ভর্তি মাংস আর খাওয়া হয়নি তাদের। আমরা হরিণের মাংসের সঙ্গে নৌকা তিনটিও জব্দ করেছি।’
সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বন্য প্রাণী নিধন আইনে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে হরিণের রান্না করা মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।