সরকারের অপরাধ হচ্ছে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া: জোনায়েদ সাকি

গণতন্ত্র মঞ্চের রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য দেন জোনায়েদ সাকি। শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরের গণকপাড়া এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: বর্তমান সরকারের অপরাধ বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া। এ মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরের গণকপাড়া এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে গণতন্ত্র মঞ্চের রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার প্রধান অপরাধ হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া। তাঁর নাগরিক মর্যাদা কেড়ে নেওয়া। এই দেশটার পত্তন হয়েছে ভোটাধিকারের সংগ্রাম করে। ভোটের অধিকার চাই, ক্ষমতা হস্তান্তর চাই, সেই লড়াই করতে করতে মুক্তিযুদ্ধে রূপান্তরিত হয়েছে। যে দলের নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের আজকে ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়াটাই গণতন্ত্র। বাংলাদেশে জমিদারি বন্দোবস্ত কায়েম করা হয়েছে। এখানে ভোট বলে আর কিচ্ছু নাই। সমস্ত ভোটব্যবস্থা তারা উঠিয়ে দিয়েছে।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘এই সরকার কাদের। এই দেশের কয়েকটি লাখো কোটিপতিদের। এদের সাহায্য করছে রাষ্ট্রের সবগুলো প্রতিষ্ঠান। কতটা সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে, তার দৃষ্টান্ত পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমেদ। দেশের জনগণের সম্পদ বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে। কথা বললে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার মানহানি হয়েছে নাকি, রাজশাহীতে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। এই সরকারের পতন ঘটিয়ে সংবিধানের সংস্কার করতে হবে।’

প্রতিনিধি সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে রাষ্ট্রের আমূল সংস্কার দরকার। এটি করতে হলে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো করে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ দরকার। আজকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। আজকে সবাইকেই শপথ নিতে হবে, এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করতে হলে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ দরকার।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, তাঁরা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলেন। একটা পর্যায় গিয়ে দেখা গেছে, লড়াইটা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে গেছে, সেই সময়ে গিয়ে আসলে লড়াইটা দিকনির্দেশনার অভাবে বসে গেছে। এই আন্দোলনের যাঁরা প্রধান শক্তি ছিলেন, যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন, তাঁরা একটা পর্যায়ে গিয়ে দিকনির্দেশনাহীন হয়ে পড়েন। গত ২৮ ডিসেম্বরের পর গণতন্ত্র মঞ্চ এক দিনের জন্যও, এক বেলাও, এক মুহূর্তের জন্য রাজপথ ছাড়েনি। তাঁদের সামান্য শক্তি দিয়ে তাঁরা রাজপথে ছিলেন। মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়া রাজনৈতিক দলকে মাঠে নামানোর চেষ্টা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সভাপতিত্বে ও গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক মুরাদ মোর্শেদের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রউফ মান্নান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল বিশ্বাস প্রমুখ।