ইফতেখার রাফসান, যিনি রাফসান দ্য ছোটভাই নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত ও জনপ্রিয় |ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম রাফসান দ্য ছোট ভাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর লাখ লাখ ফলোয়ার। তাই ২৬ বছর বয়সী এই তরুণকে বলতে গেলে সবাই চেনেন-জানেন। এই সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারকে নিয়ে তেমন সমালোচনা না থাকলেও এবার ভিন্ন একটি বিষয়ে লাইমলাইটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আয়ে কেনা একটি গাড়ি কেন্দ্র করেই বিতর্ক ও সমালোচনার সূত্রপাত।

সম্প্রতি মা-বাবাকে একটি অডি গাড়ি উপহার দিয়েছেন রাফসান। সেটি নিয়েই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। এ ঘটনা নিয়ে যখন সবাই ইতিবাচক মন্তব্য করছেন, এত কম বয়সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন একজন তরুণ, ঠিক তখনই একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী আনলেন নতুন এক তথ্য। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো তাণ্ডব চলছে। তবে বিষয়টি রাফসানকে ঘিরে নয়, মূলত তাঁর মা-বাবার ব্যাংকঋণ কেন্দ্র করে ছড়াচ্ছে উত্তাপ।

সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী বলছেন, রাফসানের বাবা আড়াই কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। সেটি এখন বেড়ে সোয়া তিন কোটি। রাফসান চাইলেই গাড়ি না কিনে বাবার কোম্পানির নেওয়া ব্যাংকঋণ শোধ করতে পারতেন।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাফসান ও তাঁর পরিবারকে তুলোধুনা করছেন নেটিজেনরা। পক্ষে-বিপক্ষে তর্কবিতর্ক চলছে। সে কারণেই বিষয়টি নিয়ে আর চুপ থাকতে পারেননি রাফসান। নিজের ফেসবুক পেজে দিলেন বিশদ বিবরণ।

 মঙ্গলবার রাতে নিজের ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে রাফসান বলেন, ‘আমি গতকাল ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখলাম, আমি নাকি ২ কোটি টাকার একটা গাড়ি কিনেছি, আর আমার বাবার নাকি ৩ কোটি টাকার লোন। এখানে কিছু ভুল তথ্য আছে। আমার এই গাড়ির দাম ২ কোটি টাকার আশপাশেও না। এটা একটু চেক করে দেখেন, এটা অনেকেই জানে।’

ভিডিওতে বাবা-মায়ের ঋণ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন রাফসান। বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ঋণ পরিশোধ করব কীভাবে? কারণ, আদালত তো এখনো নির্ধারণ করে দেননি কত টাকা পরিশোধ করতে হবে।’

ঋণসংক্রান্ত বিষয় নিয়েও খোলাসা করেন রাফসান। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে কিছু জিনিস বন্ধক রাখতে হয়। আমরা একটা জমি বন্ধক রেখেছি, সেটার দাম যদি ১০ টাকা হয়, আমরা ঋণ নিয়েছি এক টাকা। তারা এই ঋণের পরিবর্তে আমাদের ১০ টাকার জিনিসটা নিতে চায়। তাই আমরা আদালতে গিয়েছি।’

এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, ‘আপনি আমাকে বলেছেন, আমি একজন সন্তান হয়ে কেন ঋণ পরিশোধ করছি না। আমি বলতে চাই, আমার ভাই ও আমি যথেষ্ট ভালো সন্তান। আমি ও আমার ভাই মিলে অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করতে পারি। কিন্তু আদালত তো বলে নাই কত টাকা পরিশোধ করতে হবে, তাহলে আপনি বলে দেন কত টাকা পরিশোধ করব?’

শুধু তা–ই নয়, ‘বিষয়টি যে বা যারা ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও বিজ্ঞাপন মডেল রাফসান। তিনি বলেন, যিনি মোরাল পুলিশিং করছেন, তিনি ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমি আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমরা কি হাজার কোটি টাকা নিছি? দেশের বাইরে পালিয়ে গেছি? না, আমরা এখানে। যখনই কত টাকা পরিশোধ করতে হবে জানব, তখন পরিশোধ করে দেব।’

রাফসানের ভিডিওটি এখন পর্যন্ত দেখেছেন প্রায় ৯০ লাখ মানুষ। সেই সঙ্গে হাজার হাজার মন্তব্য। ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি আছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও। কেউ কেউ বলছেন, খোঁড়া যুক্তি দেখাচ্ছেন রাফসান দ্য ছোট ভাই।