নাটোরের বড়াইগ্রামের বাগডোব মন্ডলপাড়ায় আগুনে ৩০ বিঘা জমির পানবরজ পুড়ে যায়। শনিবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ২৬টি পানবরজ আগুনে পুড়ে গেছে। পাশের জমির মরা শিমগাছ পোড়াতে গিয়ে এ আগুনের সূত্রপাত। আজ শনিবার দুপুরে মাত্র আধা ঘণ্টায় উপজেলার বাগডোব মন্ডলপাড়ায় এসব পানবরজ ভস্মীভূত হয়ে যায়। এ ঘটনায় জামাত আলী (৬০) নামের এক শ্রমিক আহত হয়েছেন।
বড়াইগ্রামের বনপাড়া ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাগডোব মন্ডলপাড়ায় নিজাম উদ্দিন নামের এক কৃষক আগুন দিয়ে তাঁর জমির মরা শিমগাছ পোড়াচ্ছিলেন। এমন সময় বাতাসে ওই আগুন পাশের একটি পানবরজে লেগে যায়। দমকা বাতাসে মুহূর্তেই পাশাপাশি থাকা অন্তত ২৬টি পানের বরজে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। পাশেই বড়াল নদ থাকলেও পানি না থাকায় লোকজন আগুন নেভাতে পারেননি।
খবর পেয়ে বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছুটে আসেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর রাস্তা না থাকায় এবং পানির উৎস না থাকায় মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে পাশাপাশি থাকা ২৬ জন কৃষকের প্রায় ৩০ বিঘা জমির পানবরজ পুড়ে যায়।
এ সময় একটি পানবরজে কাজ করছিলেন জামাত আলী নামের এক শ্রমিক। আগুনের শিখায় ভয় পেয়ে তিনি বরজ থেকে বের হতে পারছিলেন না। পরে তাঁর ছেলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। ততক্ষণে তিনি আগুনে কিছুটা আহত হন। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে বাড়িতে নেওয়া হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত শ্রমিক জামাত আলী জানান, তিনি একটি বরজের ভেতরে কাজ করছিলেন। এ সময় বরজের পাশের একটি শিমের জমি থেকে আগুন ধেয়ে আসে। নদীর ধারের খোলা জায়গায় বরজগুলো একটার সঙ্গে অন্যটা লেগে থাকায় আগুন মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পর বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিন আলী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনি শিমের জমিতে আগুন দেওয়ার কাজে জড়িত নিজাম উদ্দিনের খোঁজ নেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক আছেন।
মোমিন আলী জানান, আগুনে অন্তত ২৬ জন পানচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁর মধ্যে আবদুল হামিদের সাড়ে চার বিঘা, জামাত আলীর সোয়া বিঘা, আতাউরের দেড় বিঘা, মুস্তাকের দেড় বিঘা, আরশেদের দেড় বিঘা এবং লতিফ, আবেদ, মারফত আলীর এক বিঘা করে জমির পানের বরজ পুড়ে গেছে।
বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা একরামুল হাসান বলেন, রাস্তা না থাকায় তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। এর ফলে আগেই আগুনে সবকিছু পুড়ে যায়। এ ছাড়া নদীতে পানি না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারাও আগুন নেভাতে পারেনি। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব হয়নি।