নেতা-কর্মীদের নিয়ে হাসপাতাল পরিষ্কার করছেন হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ। মঙ্গলবার সকালে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি জয়পুরহাট: পরনে সাদা গেঞ্জি আর পায়জামা। দুই হাতে গ্লোভস। হাতে ঝাড়ু নিয়ে হাসপাতালের মেঝের ময়লা পরিষ্কার করছেন। সঙ্গে আছেন আরও ৪০ থেকে ৫০ জন। পুরো হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কর্মযজ্ঞ চলছে। এতে নেতৃত্ব দেন জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-ক্ষেতলাল-কালাই) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ (স্বপন)।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান হুইপ। দেড় ঘণ্টা ধরে চলা অভিযানে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগের ময়লা-আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কার করা হয়। হুইপের এ কার্যক্রমে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা মুগ্ধ হয়েছেন। তাঁরা হুইপের কাছে হাসপাতালের চিকিৎসক-সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় যোগদানের আগে গতকাল পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ। তিনি হাসপাতালের ভেতরে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশ দেখে নিজেই হাসপাতাল পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেন। আজ সকালে তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে এসে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকাল ১০টার দিকে গেঞ্জি-পায়জামা ও গ্লোভস পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন হুইপ। তিনি ঝাড়ু হাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেন। নেতা-কর্মীরাও তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। ব্লিচিং পাউডার ও পানি দিয়ে মেঝে ও দেয়াল ধুয়ে দেন। দেড় ঘণ্টা পর পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, আজ হুইপ নিজ হাতে হাসপাতালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন। এটা সত্যিই প্রশংসনীয় কাজ। তবে হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক-সংকট চলছে। তাঁরা হুইপের কাছে দ্রুত হাসপাতালের চিকিৎসক-সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু শফি মাহমুদ বলেন, গতকাল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন হুইপ। সভায় যোগদানের আগে তিনি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তখন হাসপাতালে কিছু ময়লা-আবর্জনা লক্ষ করেছিলেন। আজ হুইপ নিজেই হাসপাতালে এসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। সরকারিভাবে দুজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে সব সময় হাসপাতাল পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয় না। তারপরও সাধ্যমতো চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, তিন সপ্তাহ ধরে একজন চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চলছে। গত সপ্তাহে একজন যোগদান করেছেন। আরও দুজন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে। তাঁরা এখনো যোগদান করেননি।
হুইপ আবু সাঈদ আল-মাহমুদ বলেন, জনগণের স্বার্থে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের লক্ষ্যে আজ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে হাসপাতাল পরিষ্কার করেছেন। আশা করছেন প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট শুক্রবারে কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। হাসপাতালের জনবল-সংকটসহ অন্যান্য সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।