আগামী এক বছর ঢাকার খাল উদ্ধারে মনোযোগ দেবেন মেয়র আতিক

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঢাকা, ১৩ মে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী এক বছর অবৈধভাবে দখলে রাখা খাল উদ্ধার এবং নতুন যুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে বেশি দৃষ্টি দিতে চান বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। পাশাপাশি এডিস মশা নিধনের কাজও চলবে।

আজ সোমবার রাজধানীর গুলশান-২–এ ডিএনসিসির নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আতিকুল ইসলাম। দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের চতুর্থ বছরপূর্তি উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

লেকে ও খালে বাসাবাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেওয়া নিয়ে কলাগাছ থেরাপির বিষয়টি উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কীভাবে বারিধারা ও গুলশানের লোকেরা খালের মধ্যে বাড়ির বর্জ্য দিয়ে দিচ্ছেন!

নিজের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তরের মেয়র বলেন, ‘ব্যর্থতা তো আছেই। আধুনিক পশু জবাইখানা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু করতে পারিনি। কীভাবে করব, কীভাবে করলে টেকসই হবে! স্বপ্ন ছিল গাছ ও প্রাণীর হাসপাতাল করার। সেটাও হয়নি, তবে পরিকল্পনা চলছে।’

আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে সবাই যখন শুধু নিজের চিন্তা করে। আমরা কেউ অন্যের চিন্তা করি না। খাল যখন দূষিত হয়ে যাচ্ছে, তখন কীভাবে বাথটাব, টিভি, ফ্রিজ বা জাজিম খালে ফেলে দেয়? এ কারণে জলাবদ্ধতা তো হবেই।’ তবে অনেক জায়গায় আগে যেখানে জলাবদ্ধতা হতো, সেগুলো দূর করা হয়েছে বলে জানান মেয়র।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশন যদি কোনো কাজ না করত, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। করোনার মধ্যেও সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ে প্রচার–প্রচারণা চালিয়েছে। এখনো তাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রম চালাতে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ অভিযান চালিয়ে চার কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ও আবর্জনা নগদ টাকায় কেনা হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে গত চার বছরের বিভিন্ন কার্যক্রম ও সফলতা তুলে ধরেন মেয়র আতিক। নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তিনি বলেন, দুই বছরে দুই লাখ গাছ রোপণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। গত বর্ষায় (জুন-অক্টোবর) ফুটপাত, সড়ক বিভাজক, পার্ক ও খোলা জায়গায় ৯০ হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নিয়ে গাবতলী এলাকায় ৪০ একর জায়গা দখলমুক্ত করেছেন বলে জানান ঢাকা উত্তরের মেয়র। তিনি বলেন, বছিলার বেড়িবাঁধে দুই একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া মহাখালী-মগবাজার উড়ালসড়কে স্ট্রিট আর্ট, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, দ্রুত কোরবানির বর্জ্য অপসারণ, মেয়রস কাপ, পার্ক ও খেলার মাঠের উন্নয়ন, প্যারিস রোড মাঠ উদ্ধার, খাল উদ্ধার ও পরিষ্কারের বিষয়গুলো তুলে ধরেন তিনি। গত ৪ বছরে ৩০৩ কিলোমিটার রাস্তা, ৭০ কিলোমিটার ফুটপাত ও ২৮৮ কিলোমিটার নালা নির্মাণ করা হয়েছে বলেও জানান মেয়র।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরীসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।