সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন কাউন্সিলর আবুল হাশেম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: ভূমিদস্যুতার প্রায় ৪০টি মামলায় মানুষকে দিনের পর দিন হয়রানি ও তাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পাবনার ঈশ্বরদীতে কামরুজ্জামান সিরাজ নামে এক ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ঈশ্বরদী পৌরসভার সকল ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার মিলনায়তনে  'পৌর পরিষদ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাশেম এতে সভাপতিত্ব করেন ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ মিন্টু। 

এতে অভিযোগ করা হয়, পৌর এলাকার পাতিলাখালি গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান সিরাজ একজন জটিল 'মামলাবাজ’। তিনি কখনো, 'জাতীয়পার্টি বা 'জামায়াত’, কখনো ’বিএনপি’ বা 'আওয়ামীলীগ’ সেজে বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ মানুষ ও সমাজের বিশিষ্টজনের বিরুদ্ধে প্রায় ৪০টি মামলা করছেন। এমন কি মাঝেমধ্যে সংবাদ সম্মেলনে ’অসত্য’ অভিযোগ উপস্থাপনের মাধ্যমে তিনি মানুষকে সামাজিক ভাবে হয়রানি ও তাঁদের মানসম্মত ক্ষুণ্ন করছেন- যা ঈশ্বরদীর জন্য খুবই দুঃখজনক।

আবুল হোসেন জানান, শিক্ষাদীক্ষা, নারী-শিশুর অধিকার, স্বাস্থ্যসেবাসহ আর্থসামাজিক নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ঈশ্বরদী যখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে; ঠিক সেই সময় সমাজে এ ধরনের ’ভূমিদস্যু’, ’মামলাবাজ’ চক্রের কারণে ঈশ্বরদী সুনাম ক্ষুণ্ন এবং সাধারণ মানুষেরা সীমাহীন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় ’মামলাবাজ’ ওই ব্যক্তিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

তিনি আরও জানান, শুধু ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে নয়, ওই ’মামলাবাজ’ চক্রটি বিভিন্ন সময়ে ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা, পৌর কাউন্সিলর, সার্ভেয়ার ও কর্মচারীদেরর হুমকিধামকি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন। এতে পৌরসভার কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে। তারা কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান সিরাজের বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ১৩জন নারীপুরুষও উপস্থিত ছিলেন। এসময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাদের হয়রানির নানা অভিযোগ তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে এবং তাকে আইনের আওতায় আনবার অনুরোধ জানান। 

হোসনে আরা নামে এক নারী বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইতিপূর্বে তাকে ’মাস্তান’ দিয়ে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়। 

এতে সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর ফরিদা ইয়াসমিন, ফিরোজা বেগম, সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল হোসেন, মনিরুল ইসলাম সাবু, জাহাঙ্গির হোসেন, আমিনুল ইসলাম, ওয়াকিল আলম, আবু জাহিদ উজ্জ্বল ও ইউসুফ আলী প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

ঈশ্বরদী থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আসলেই কামরুজ্জামান সিরাজ মানুষকে হয়রানি করছেন বলে আমরা শুনেছি। অনেক মানুষ মৌখিক ভাবে আমাদের অভিযোগও করেন। ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে বিরোধ করে আসছেন, মামলা দিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা এসব চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে যেতে চাই। 

এ ব্যাপারে কামরুজ্জামান সিরাজের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন সময় তার জমিজমা দখলের চেষ্টা করছেন মানুষ। এজন্য তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন ও জড়িতদের নামে মামলা করেছেন।