কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’-এর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শনিবার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি কক্সবাজার: প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আদালতে বিচারপ্রার্থী মানুষ ও সাক্ষীদের বিশ্রাম বা বসার তেমন ব্যবস্থা থাকে না। সাবেক প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে দেশের প্রতিটি আদালতে বিচারপ্রার্থী মানুষদের বসার জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বিচারপ্রার্থী মানুষদের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ন্যায়কুঞ্জ-বিশ্রামাগারের নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি ন্যায়কুঞ্জের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন।
মাদক চোরাচালানের জন্য আলোচিত এলাকা কক্সবাজার। কক্সবাজার আদালতে মাদকের মামলা আছে প্রায় দুই হাজার। কয়েকটি আদালতে মাদকের মামলার বিচার চলছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতা ও ধীরগতির কারণে বিচারপ্রার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। মাদকের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা প্রদানের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, মাদকের মামলাগুলো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য জজ সাহেবরা তৎপর আছেন। তারপরও এ ক্ষেত্রে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ন্যায়কুঞ্জের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আবদুল আজিজ, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। এরপর প্রধান বিচারপতি আদালত ভবনের বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন।
কক্সবাজার জেলা জজ আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের মধ্যবর্তী জায়গায় ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণ করা হচ্ছে। গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচএম কনস্ট্রাকশন।
গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, ন্যায়কুঞ্জের আয়তন এক হাজার বর্গফুট। এখানে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৭০ জনের বসার ব্যবস্থা থাকবে। ওয়াশরুম, ব্রেস্টফিডিং কর্নার, ফাস্ট ফুডের দোকান, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা কক্ষে বসার ব্যবস্থাসহ বহুমুখী সুবিধা রাখা হচ্ছে। প্রায় ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ন্যায়কুঞ্জের কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ করার প্রস্তুতি আছে।
টেকনাফে রিসার্চ সেন্টারের জমি পরিদর্শন
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান দুই দিনের সফরে গতকাল শুক্রবার কক্সবাজার আসেন। গতকাল বিকেলে তিনি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের ১৩ জন বিচারপতি, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের আরও ৪ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
রিসার্চ সেন্টারের জন্য ভূমি বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভূমি উন্নয়নসহ সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ শুরু হবে। কাজের সফল বাস্তবায়নে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হবে।’