রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী শহরে একটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। এর মধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ একটি প্রকল্প নিয়ে জেলা পরিষদের একটি জায়গায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলে জেলা পরিষদ তাতে আপত্তি জানায়। পরে মন্ত্রণালয় বিষয়টি সুরাহা করে জেলা পরিষদকে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল শনিবার ওই জায়গায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন।

রাজশাহী নগরের প্রাণকেন্দ্র সোনাদীঘি এলাকায় ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিত্যক্ত জায়গায় আজ এই উদ্বোধন উপলক্ষে কটি সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বদিউজ্জামান খায়ের, আইনজীবী সুশান্ত সরকার, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, তারা একই স্থানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে চেয়েছিল। এ জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রয়াত প্রধান কৌঁসুলি ও ভাষাসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম আরিফ টিপু। উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন, ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল। মীর ইকবাল পরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর রাজশাহী সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় ওই শহীদ মিনারের দরপত্র আহ্বান করেছিল। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি কার্যাদেশও দিয়েছিল। ঠিকাদার খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করলে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়ায়। মন্ত্রণালয় জেলা পরিষদকেই শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত দেয়। শেষ পর্যন্ত ওই জায়গায় শহীদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

এখন জেলা পরিষদ অর্ধেক টাকায় (৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা) সেই কাজ বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ এই কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করেছে। আজ সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল বলেছেন, ‘ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু ভাই আমাকে খুব স্নেহ করতেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা এই কাজটি এগিয়ে নিতে চাই। এর আগে জেলা পরিষদের জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল করেছে সিটি করপোরেশন। এবার আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সভাতেই জেলা পরিষদের এই জায়গায় জেলা পরিষদের উদ্যোগেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার করার সিদ্ধান্ত নিই। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা কাজটা শেষ করব।’