সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার গার্ডেন প্যালেস হোটেলে অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। এখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এক প্রার্থীর সঙ্গে আটজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগে গ্রেপ্তার পাঁচ প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ ছয়জনকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া একটার দিকে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই ছয়জনকে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। যেকোনো সময় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

গত রোববার রাত আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে ওই বৈঠকের ঘটনা ঘটে। সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বনবাড়িয়া কাদাই পার্কের ভেতরে নবনির্মিত গার্ডেন প্যালেস হোটেলে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে ওই বৈঠকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে রাত ১০টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পুলিশ আড়াই ঘণ্টা ধরে অভিযান পরিচালনা করে। তবে সেখানে কোনো তথ্য উদ্‌ঘাটন করতে না পেরে শেষে ওই পার্কের প্রবেশপথ ও ভেতরের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। সেই সঙ্গে পার্কটির তিন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পরে ভিডিও ফুটেজ দেখে, প্রযুক্তির ব্যবহার করে ও পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর গোপন বৈঠকের সত্যতা পাওয়া যায়। এতে জড়িত আট প্রিসাইডিং কর্মকর্তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় বাদী হয়ে ৮ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার নাম উল্লেখ এবং আরও অজ্ঞাতনামা ২০ জনকে  আসামি করে মামলা করেন। সেই সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলে। সোমবার রাত ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ শামসুদ্দিন সম্মেলনকক্ষে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ গোপন বৈঠক ও গ্রেপ্তার আসামিদের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান।

ওই সংবাদ সম্মেলনে এজাহারনামীয় আট প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মধ্যে গ্রেপ্তার পাঁচজনের নাম-পরিচয় জানানো হলেও অন্য তিনজনের নাম-পরিচয় জানানো হয়নি। এ ছাড়া তদন্তে এই গোপন বৈঠকের মূল আয়োজক হিসেবে শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আমিনুর ইসলামের নাম উঠে আসে। তাঁকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।